ভোট কেনাবেচার মহোৎসবে শেষ হলো বদরখালী সমিতির নির্বাচন

কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নে অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম সমবায় প্রতিষ্ঠান বদরখালী সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতি-র নির্বাচন ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ২০ সেপ্টেম্বর।
নির্বাচনে সভাপতি পদে ৩ জন, সহ-সভাপতি পদে ৩ জন, সম্পাদক পদে ৩ জন এবং পরিচালক পদে ২৩ জন—মোট ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
প্রার্থীরা ভোটের আগের দিন পর্যন্ত স্বাভাবিক প্রচার-প্রচারণা চালালেও নির্বাচনের আগের রাত থেকে নগদ অর্থের মাধ্যমে ভোট কেনাবেচার প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যা ভোটের দিন দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
জানা গেছে—
সভাপতি পদে জনপ্রতি ৬,০০০ টাকা বা তার বেশি,
সহ-সভাপতি পদে ২,০০০–২,৫০০ টাকা,
সম্পাদক পদে ৪,০০০–১২,০০০ টাকা,
পরিচালক পদে ২,০০০ টাকা বা তার বেশি
দিয়ে ভোট কেনা হয়।
এক রাতেই ৩–৪ কোটি টাকা ভোট কেনার পেছনে ব্যয় হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
অনেক পরিচালক প্রার্থী শুরুতে ভোট কেনার বিপক্ষে থাকলেও, হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় তারাও শেষ পর্যন্ত ওই পথে হাঁটেন। কেউ সফল হন, কেউবা প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় কম টাকা দেওয়ায় ব্যর্থ হন।
ভোট কেনাবেচার এই প্রতিযোগিতার মধ্যে কিছু জনপ্রিয়, যোগ্য এবং সৎ প্রার্থী শুধুমাত্র টাকা না দেওয়ার কারণে পরাজিত হন। তাদের মধ্যে রয়েছেন—
সম্পাদক প্রার্থী এ.এম. এসতেফাজুর রহমান, পরিচালক প্রার্থী কামরুল ইসলাম, মাওলানা জমির উদ্দিন এবং কপিল উদ্দিন মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
সমিতির একজন সদস্য জানান, ১৫০০ সদস্যের মধ্যে মাত্র ৩০০–৪০০ জন সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকে কোনো প্রকার অর্থ ছাড়াই ভোট দিয়েছেন। কিন্তু এই সংখ্যা এক-তৃতীয়াংশেরও কম হওয়ায় যোগ্য প্রার্থীদের পরাজয় ঘটে।
সচেতন মহলের মতে, টাকা খরচ করে ক্ষমতায় যাওয়া প্রার্থীরা পরে নিজেদের বিনিয়োগ তুলতেই ব্যস্ত থাকেন, ফলে সমিতির সার্বিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তা সত্ত্বেও সাধারণ ভোটারদের একটি অংশ টাকার লোভে পড়ে অনৈতিক এই প্রক্রিয়াকে প্রশ্রয় দেন।
নির্বাচনে ১৫০০ ভোটারের মধ্যে ১৩৭১ জন ভোট প্রদান করেন। এতে ৩২ জন প্রার্থীর মধ্যে
সভাপতি ১ জন,
সহ-সভাপতি ১ জন,
সম্পাদক ১ জন,
পরিচালক ৯ জন
মোট ১২ জন প্রার্থী নির্বাচিত হন।