জ্বর তীব্র হলে কী করবেন?
![ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমীন](https://www.amader-din.com/uploads/shares/dr-2021-03-13-23-09-30.jpg)
জ্বরের তীব্রতা বেশি হলে অনেকেই কেবল জলপট্টি দেন। তবে এর পাশাপাশি সারা গা মুছে দিলেও ভালো ফল পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমীন। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : জ্বর তীব্র হলে কী করবেন?
উত্তর : আমাদের এখানে দেখা যায়, যখন বাচ্চাদের জ্বর হলে বাবা-মায়েরা মাথায় পানি বা জলপট্টি দিতে থাকেন। আসলে জ্বর তো আর শুধু কপালেই থাকে না। সারা শরীরেই থাকে। এই জন্য আপনি যদি চিন্তা করেন আমাদের শরীরের এক ভাগ কেবল কপাল, ৯৯ ভাগ কিন্তু অন্য অংশ। তাই যদি শুধু জল দেওয়া হয়, জ্বর কমার কোনো সুযোগ থাকে না। এই জন্য আমি বলব যদি দেওয়া হয় সমস্ত শরীরই যেন মোছা হয়। এই ক্ষেত্রে খুব ঠান্ডা পানি ব্যবহার করবেন না। ঠান্ডা পানি ব্যবহার করলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। হালকা গরম পানি থাকবে। আরো ভালো হয়, যদি কোনো একটি কাপড় ধুয়ে মুছে দেওয়া হয়। এখানে কিছু পদ্ধতি আছে, পদ্ধতিগুলো যদি কোনো মানুষ অনুসরণ করে খুব লাভ হবে। প্রথমে একটি হাত মোছেন, এরপর আরেকটি হাত, এরপর একটি পা ও তারপর আরেকটি হাতে করলে জ্বরের মাত্রাটা কমে যাবে। একটি চক্র মেনে চলতে পারেন।
এই চক্রটি যদি আপনি দীর্ঘ সময় মেনে চলেন, তাহলে জ্বর তীব্রভাবে হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বাইরের দেশে কিছু গবেষণা হয়েছে, এই পদ্ধতিতে যদি কেউ স্পঞ্জিং করে, সেটা প্যারাসিটামল বা অন্যান্য যে ওষুধ দিয়ে থাকি, তার সমপরিমাণে কাজ করে। তবে আমাদের এখানে ধৈর্য কম থাকে, তাই আগেই আমরা প্যারাসিটামল শুরু করে দিই। তা ছাড়া একটি পর্যায়ে এসে জ্বর কিন্তু অনেক উপকারী। ধরেন আপনি ১০০ বা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট রাখেন। এতে কিন্তু অনেক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া মারা যায়। তার ওপরে চলে গেলে কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য একটি সমস্যা। সেই ক্ষেত্রেই আমরা কিন্তু জ্বরের জন্য কোনো ওষুধপত্র দিয়ে থাকি।
প্রশ্ন : টাইফয়েড বা ম্যালেরিয়াজনিত জ্বরের ক্ষেত্রে পরামর্শ কী থাকে?
উত্তর : যখন জ্বরের রোগীরা আসে তখনই তো কিন্তু পরিষ্কারভাবে বোঝার উপায় নেই যে এটা কি আসলে ভাইরাল জ্বর নাকি অন্য কোনো জ্বর, টাইফয়েড, নাকি ম্যালেরিয়া। সেই ক্ষেত্রে আমরা কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করি। আরেকটি হচ্ছে যে জ্বরের জন্য আমরা কিছু ওষুধপত্রও দিয়ে থাকি। স্বাভাবিকভাবে যা বললাম, এর বাইরেও প্যারাসিটামল ট্যাবলেট আছে, এটা দিলেও জ্বরের মাত্রাটা কমে আসবে। জ্বরের সম্পূর্ণ অন্তর্নিহিত কারণ যদি নাও ভালো হয়, খুব খারাপ অবস্থায় যাবে না। এর মধ্যে আরেকটি দেখা যাবে যে প্যারাসিটামল দিলেও জ্বরের মাত্রা পুরোপুরি না ও কমতে পারে। সেই ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল সাপোজিটরি আছে। এগুলো বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অনেক উপকারী হয়। যদি কারো ১০৪ ডিগ্রি তাপমাত্রা হয় তখনই সাপোজিটরি দিতে হবে। দিনে দুবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।
প্রশ্ন : কোন রোগের কারণে জ্বর হচ্ছে সেটি পরীক্ষা কবে করবেন?
উত্তর : প্রথমে দেখতে হবে রোগীটা আমাদের কাছে কবে আসছে। সাধারণত প্রথম দিনেই পরীক্ষা করে যে অনেক লাভ হয় সেটি নয়। দু-তিনদিন পর থেকে যদি পরীক্ষা করা হয়, এটার ফলাফল ভালো আসে।