ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে ফেনী ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠাসহ একাধিক দাবিতে ফেনী ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে দুই দিকেই দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয় এবং যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহিপাল ফ্লাইওভারের উত্তর প্রান্তে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন। এর আগে হাজারী রোড থেকে পদযাত্রা করে তারা মহাসড়কে ওঠেন।
আন্দোলনকারীরা স্থায়ী ক্যাম্পাস ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাস সার্ভিস চালু, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন দাবি জানান। বিক্ষোভ চলাকালে তারা নানা স্লোগানও দেন।
শিক্ষার্থী মাইশা আক্তার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু বারবার শুধু আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এবার বাধ্য হয়ে মহাসড়কে নামতে হলো। স্থায়ী ক্যাম্পাস না হলে ইউজিসি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে রেড লিস্টে ফেলতে পারে। তখন হাজারো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়বে।’
অন্য এক শিক্ষার্থী সাজিদুল ইসলাম জানান, ‘আমরা সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছি। আজ মহাসড়ক অবরোধ করেছি। যদি শিগগিরই দাবি মানা না হয়, তবে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
এদিকে বুধবার রাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম জামালউদ্দীন আহমদ পদত্যাগ করেন। এর আগেই ১৮ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থীরা স্থায়ী ক্যাম্পাস ও অন্যান্য দাবি নিয়ে অনির্দিষ্টকালের শাটডাউন কর্মসূচি শুরু করেছিলেন।
অবরোধ ঘিরে সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পুলিশের বাধা পেরিয়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে উঠে অবস্থান নেন। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মিজ ফাতিমা সুলতানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা নাসরিন কান্তাসহ সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করেছিল। পরে আমরা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখন তারা সড়ক থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে আলোচনায় বসবে।’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের ১৩ আগস্ট শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন দাবি করে ১৫ দফা প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরবর্তীতে ২১ অক্টোবর শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। সর্বশেষ এ বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারিতেও একই দাবিতে তারা আন্দোলনে নামেন।