‘মুসলিমদের অধিকার খর্ব!’ সুপ্রিম কোর্টে মামলা দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা বিধায়কের

সংশোধিত ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর নেতা তথা সাংসদ আসাদুদ্দিন ওয়েইসি। এ বার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলেন দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা আপ বিধায়ক আমানতুল্লাহ খান। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে সংশোধনী ওয়াকফ বিলের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন আমানতুল্লাহ।
আপ বিধায়ক তথা দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের দাবি, মোদী সরকার যে বিল পাশ করিয়েছে, তাতে মুসলিমদের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক অধিকার খর্ব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এই বিল নির্বিচারে ওয়াকফের উপর হস্তক্ষেপ করে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুরা তাঁদের ধর্মীয় এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার অধিকার হারাচ্ছে এই বিলের ফলে।’’
সংসদের দুই কক্ষেই পাশ হয়েছে সংশোধিত ওয়াকফ বিল। এ বার তা পাঠানো হবে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে। তিনি সই করলেই আইনে পরিণত হবে ওই বিল। সংসদে বিলটি নিয়ে দীর্ঘ বিতর্কের পরে ভোটাভুটিতে পাশ হয় বিল।
উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালের আইনকে সংশোধন করে ১৯৯৫ সালে ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়েছিল ভারত সরকার। কিন্তু ৩০ বছর পরে যে সংশোধনে সিলমোহর দিল ভারতীয় সংসদ, তাতে বোর্ডের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতার খোলনলচে বদলে যেতে চলেছে। যদিও সব ক’টি বিরোধী দলেরই দাবি, ওয়াকফ আইনের এই সংশোধন ওয়াকফ বোর্ডের ক্ষমতাকে বেনজির ভাবে খর্ব করে দিচ্ছে।
নয়া বিলে আইনে পরিণত হলে বিলুপ্ত হবে ওয়াকফ বোর্ডের একচ্ছত্র অধিকার। কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ কি না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জেলাশাসক বা সম পদমর্যাদার আধিকারিকদের হাতে দিতে চলেছে মোদী সরকার।
এখন দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের দাবি, এর ফলে মুসলিম সম্প্রদায় তাদের অধিতার হারাচ্ছে। বস্তুত, ধর্মীয় এবং দাতব্য উদ্দেশ্যে দান করা বা নিবেদিত সম্পত্তির দেখভাল করে থাকে ওয়াকফ বোর্ড। এর মধ্যে রয়েছে মসজিদ, দরগা, সমাধিস্থল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রেল এবং প্রতিরক্ষা দফতরের পর দেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ জমির মালিক ওয়াকফ বোর্ড। সংসদে বিজেপি দাবি করেছে, গত ১২ বছরে ওয়াকফ বোর্ডের জমির পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, ১৯১৩ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বোর্ডটির হাতে মোট ১৮ লক্ষ একর জমি ছিল। এর পর ওয়াকফ আইন সংশোধন করে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার।
২০১৩ সালে ওয়াকফ আইন সংশোধন করার পর বোর্ডটির ক্ষমতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। ফলে ২০২৫ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত ২১ লক্ষ একর জমি সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে ওয়াকফ বোর্ড। একে আইনের ‘অপব্যবহার’ এবং ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ বলে উল্লেখ করেন শাহ।
সূত্র : আনন্দবাজার ডট কম