ঢাকা সোমবার, ৫ই মে ২০২৫, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২


৮ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মহেশখালীর ছাত্রসমাজের মানববন্ধন


৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১২:০৬

আপডেট:
৫ মে ২০২৫ ২০:৫৮

৮ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মহেশখালীর ছাত্রসমাজের মানববন্ধন

আগে পুনর্বাসন, পরে অধিগ্রহণ” এই স্লোগানকে ধারণ করে “মহেশখালীর জাগ্রত ছাত্রসমাজ” এর ব্যানারে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে একটি বিশাল মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহেশখালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ চলমান অন্যান্য প্রকল্পে ভূমি অধিগ্রহণকৃত এলাকায় ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে এবং জমির উপযুক্ত মূল্য ও যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবিতে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন মহেশখালীর সর্বস্তরের পেশাজীবি, যুবক ও ছাত্র জনতা।

বক্তারা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ভিশন ২০৪১ তথা আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে জমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়েছিলো, যা এখনো চলমান আছে।

মহেশখালীর সাধারণ মানুষ এই ব্যাপারে কখনো সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেনি। কিন্তু দূর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, ইতোপূর্বে অধিগ্রহণকৃত জমির মালিকগণ তাদের কাঙ্ক্ষিত ন্যায্য মূল্য পায়নি বরং অনেকক্ষেত্রেই জমির মূল্যের মোটা অংক সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কিছু দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে দালাল চক্র লুটে নিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা আশংকা করছি, ভবিষ্যতে মহেশখালীবাসীর কাঙ্ক্ষিত ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চাকুরিপ্রাপ্তি এবং পুনর্বাসনসহ প্রয়োজনীয় মৌলিক দাবি পূরণ নাও হতে পারে।

এমতাবস্হায় আমরা সরকারের গৃহীত প্রকল্পগুলো সুন্দরভাবে এবং যথাসময়ে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করার নিমিত্তে সাধারণ মানুষের স্বার্থে নিম্নলিখিত দাবি নিয়ে হাজির হয়েছি। আমরা আশা করি, প্রান্তিক মানুষের কল্যাণের স্বার্থেই বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান গণতান্ত্রিক ও জনবান্ধব সরকার সাধারণ মানুষের দাবিসমূহ মেনে নিয়ে সার্বিক বিষয়ে জনসাধারণকে অবহিতকরণ ও সচেতনতা তৈরী পূর্বক গৃহীত প্রকল্প বাস্তবায়ন করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মহেশখালীতে পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে সমৃদ্ধ করে তুলবেন। ★কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পসহ চলমান বিভিন্ন প্রকল্পে মহেশখালীর ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের প্রাণের

দাবিসমূহ

১. প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য মূল্য একর প্রতি কমপক্ষে তিন কোটি টাকা ধার্য্য করতে হবে।

২. অধিগ্রহণকৃত জমির বৈধ কাগজপত্র (ফাইল) জমাদানের সর্বোচ্চ ০১(এক) মাসের মধ্যে জমির মালিককে সম্পূর্ণ টাকার চেক হস্তান্তর করতে হবে। অবশ্যই প্রকল্পের দালিলিক কাজ শুরু করার আগেই জমির মালিককে যথাযথ ন্যায্য মূল্য বুঝিয়ে দিতে হবে।

৩. ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের ভোগান্তি কমাতে প্রকল্প এলাকায় ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ প্রদানসহ যাবতীয় কার্যাদি সম্পন্ন করতে হবে। এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্য বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশনের মাধ্যমে প্রকল্পের সার্বিক তত্বাবধান, প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিমার্জন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

৪. ইতোপূর্বে অধিগ্রহণকৃত জমির দূর্নীতির সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে দ্রুত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবিষ্যতে দুর্নীতি ও দালালদের দৌরাত্ম্য শতভাগ বন্ধ/প্রতিরোধে অবশ্যই দৃশ্যমান ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৫. প্রকল্পে কর্মসংস্থান নিশ্চিতকল্পে স্থানীয় জনগণকে শতভাগ অগ্রাধিকার দিতে হবে এবং সেই লক্ষ্যে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে তাদেরকে যোগ্য করে তুলতে হবে। প্রকল্পে স্থানীয় মানুষ ও শিক্ষিত যুবকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে ৭০% চাকুরীর কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। ৬. বসতবাড়ি ও দোকানপাট উচ্ছেদ করে নতুন করে আর কোন জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে না। আমরা উন্নয়ন চাই, তবে গৃহহীন হতে চাইনা ।

৭.আমাদের মাটিতে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ও গ্যাস অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আগে আমাদের মহেশখালীতে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরবিচ্ছিন্নভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।

৮. প্রকল্পের কাজ শুরুর আগেই স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিরসন, ঝুঁকি মোকাবেলা ও পরিবেশ বিপর্যয় রোধে অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে। বেপজিয়ার এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি, জনাব মোস্তফা জুয়েলের সঞ্চালনায় ও অত্র সংগঠনের আহবায়ক ছাত্রনেতা ফজলে আজিম মোঃ ছিবগতুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মহেশখালী পেশাজীবি সমবায় সমিতির অর্থ সম্পাদক জনাব আকতার হোসেন, চট্টগ্রাম জজকোর্টের আইনজীবী এডভোকেট রফিকুল ইসলাম, ব্যবসায়ী নেতা জয়নাল আবেদীন, আ ন ম আহমদুল্লাহ, জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধানশিক্ষক নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি বাইজিদ ইমন, “আমরা মাতারবাড়ীর সন্তান” এর সমন্বয়ক এনামুল হক সাগর, হোয়ানক সিভিল ইয়ুথ সোসাইটির সভাপতি মেহেদী হাসান পাভেল, বিপিএড সরকারি কলেজের প্রভাষক নূর মোহাম্মদ, মোঃ মামুন, চমেক, আঃ মতিন, চুয়েট, শাহাদত হোসাইন,ছাত্রনেতা, চবি, মোরশেদ আলম, ছাত্রনেতা, এমইএস কলেজ, দিল মোহাম্মদ, সিটি কলেজ আবু নায়েম,চট্টগ্রাম কলেজ, নুরুল হোছাইন আলতাফ প্রমুখ। মানববন্ধন শেষে উক্ত সংগঠনের যুগ্ন-আহবায়ক সালাহউদ্দিন কাদের আগামী ১৪ ও ১৫ ই ফেব্রুয়ারি মহেশখালীতে বিশাল গণসংযোগ এবং ১৬ই ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।