ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


লাশ বাড়ছে ৬২-৬৩-৬৫-৬৭-৭০


২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:৩৬

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ২৩:৪১

লাশ বাড়ছে ৬২-৬৩-৬৫-৬৭-৭০

তৈরি তালিকায় সংখ্যা বাড়ছে। সবশেষ সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ৬৭টি লাশ উদ্ধারের কথা জানাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। হিসেব রাখছেন একজন কর্মকর্তা। তিনি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক কাজী নজমুস জামান। সকালে সাড়ে ৮টা নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়ায় ৭০ জনে।

রাজধানীর পুরানঢাকার ঐতিহ্যবাহী চকবাজারে কেমিক্যালের গোডাউনে আগুন, যা আশে পাশে আরও পাঁচটি ভবনে ছড়িয়ে পড়েছিলো তারই ধ্বংসস্তুপ বের করে আনা হচ্ছে এই লাশগুলো।


ঘটনাস্থলটি চারটি সড়কের মোড়। সেখানে ওয়াহেদ তিন পাশে আরও পাঁচটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে সারাবাংলার সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট জাব্বার খান জানান, পুুরো সড়ক জুড়ে কেমিক্যাল জাতীয় নানা পণ্য ও উপাদান ছড়িয়ে পড়েছে। সড়কগুলো সরু ও ঘিঞ্জি হওয়ায় পুরো অংশটি এখন এক ধ্বংসস্তুপে রূপ নিয়েছে।

সে সব ভবনের মধ্য থেকে একের পর এক লাশ বের করে আনছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। সাদা কাপড়ে ঢেকে বের করে আনা মরদেহগুলো অ্যাম্বুলেন্সে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে।

উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন এখন আওতাধীন। বুধবার (২০ ফেব্রয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন শুরু হয়।

এদিকে, আগুনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াহেদ ম্যানসন ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন উদ্ধার কর্মীরা। সারাবাংলার অপর সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট উজ্জ্বল হাসান জিসান জানান, বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান সাংবাদিকদের বলেন, পুরো ভবনটি পুড়ে টেম্পারিং নষ্ট হয়ে গেছে। ধসে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় স্থানীয়দের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের পাশে টানানো মৃতের তালিকা থেকে স্বজনের নাম খুঁজছেন একজন

ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে সারাবাংলার স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সোহেল রানা জানিয়েছেন সকাল সোয়া ৮টা পর্যন্ত মর্গে মোট ৬৫টি মরদেহ নেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জন নারী, ৩টি শিশু ও ৫৭ জন পুরুষ। মর্গের বারান্দায় সারিবদ্ধ করে রাখা হয়েছে মরদেহগুলো। আর মৃতদের একটি তালিকা টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে মর্গের বাইরে দেয়ালে।

সেখানে স্বজন হারানোদের ভীর বাড়ছে। তারা নাম দেখে জানতে চেষ্টা করছেন তাদের স্বজনদের কেউ রয়েছে কিনা। এছাড়া লাশ দেখেও সনাক্ত করার চেষ্টা করছেন। তবে মৃতদের অধিকাংশের চেহারাই এমনভাবে পুড়ে গেছে যে কোনও ভাবে তা থেকে বোঝার উপায় নেই, কার লাশ কোনটি।

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও তার পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে সারাবাংলার স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী জানান ওই সময়েও একটি ভবনের তিনটি তলায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখা যাচ্ছিলো। তবে ফায়ারের কর্মকর্তা বলেছেন, আগুন যাতে আর বাড়তে না পারে সে ব্যবস্থা তারা নিয়েছেন।

সকাল সাড়ে আটটার দিকে ব্রিফিংয়ে সে কথাই বলছিলেন ফায়ারের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আলী আহাম্মেদ খান। তিনি বলেন আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে বলা যাচ্ছে না। আমাদের কর্মীরা অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে কেমিক্যাল ও গ্যাস জাতীয় পদার্থে ঠাসা এই বাণিজ্যিক ভবনগুলো। যার কারণেই আগুন দ্রুত ছড়ায় ও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।