নকলার ফায়ার ফাইটার নাঈমকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন

পেশাদারিত্বের সময় দগ্ধ হয়ে নিহত ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈমকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়
গাজীপুরের টঙ্গীতে সাহারা মার্কেটের রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে শহীদ হন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈম। তার মরদেহ শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টায় নিজ বাড়ি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার পূর্বলাভা গ্রামে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
দিনভর অপেক্ষার পর রাত ৯টা ১০ মিনিটে নাঈমকে বহনকারী ফ্রিজিং গাড়িটি যখন তার নিজ গ্রামে পৌঁছায়, তখন সৃষ্টি হয় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। স্বজনদের কান্না, প্রতিবেশীদের ভিড় এবং চারপাশে নেমে আসে শোকের ছায়া। আকাশ যেন ভারী হয়ে যাচ্ছে। শতশত মানুষ তাকে একনজর দেখতে মরদেহবাহী গাড়ির পাশে ভিড় জমান।
রাত পৌনে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ ও শেরপুর থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এসময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ময়মনসিংহ অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক পূর্ণ চন্দ্র, শেরপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক জাবেদ হোসেন মুহাম্মদ তারেক, নকলা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।
রাত সাড়ে ১০টায় জানাজা শেষে তাকে তার নিজ বাড়ির পাশে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালকের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শ্রদ্ধাঞ্জলিও অর্পণ করা হয়।
জানা যায়, খন্দকার জান্নাতুল নাঈম ১৯৮৮ সালে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গৌড়দ্বার ইউনিয়নের লাভা গ্রামের খন্দকারপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগদান করেন। চাকরি জীবনে স্টেশন অফিসার হিসেবে মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হিসেবে চট্টগ্রাম ও সর্বশেষ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চলতি মাসের ২২ তারিখে টঙ্গীর সাহারা মার্কেটে কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নেভাতে গিয়ে তিনি দগ্ধ হন। তার শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। এরপরে গত শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭.৩০ মিনিটে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।