ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২


‘কেমিক্যাল অবশ্যই ছিল, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না


২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:০৭

আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ০০:৪৯

‘কেমিক্যাল অবশ্যই ছিল, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না

 

ঢাকা: চকবাজারের হাজী ওয়াহেদ ম্যানসনে নিশ্চিতভাবেই কেমিক্যাল ছিল বলে জানিয়েছে ওই ভবনে আগুন লাগার ঘটনা তদন্তে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) তদন্ত কমিটি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর কমিটি আরও জানিয়েছে, ওই ভবনে কোনো ধরনের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল না।

শুক্রবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় হাজী ওয়াহেদ ম্যানসন পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়।

ব্রিফিংয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান বলেন, এই ভবনে আগুন নেভানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা ছিল না।


এর আগে, বৃহস্পতিবার ওয়াহেদ ম্যানসন পরিদর্শন শেষে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বলেছিলেন, এই ভবনে কেমিক্যালের কোনো গোডাউন ছিল না। ডিএসসিসি’র তদন্ত দলও একইরকম মনে করছে কি না— জানতে চাইলে লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান বলেন, ‘এই ভবনে অবশ্যই কেমিক্যাল ছিল। এখানকার যে পাউডার, সেগুলো কেমিক্যাল। এখানে যেসব প্লাস্টিকের বোতল পাওয়া গেছে, সেগুলোও কেমিক্যাল। যিনি বলেছেন এখানে কোনো কেমিক্যাল ছিল না, সে কথাটি সত্য নয়।’

এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ডিএসসিসি গঠিত ১০ সদস্যের তদন্ত দল চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ডিএসসিসি’র তদন্ত দলে রয়েছেন— দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী ও অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক আহমেদ, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার রহমান, ডিএসসিসি’র অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান ও মো. জাফর আহমেদ, ডিএসসিসি’র প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, রাজউকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম, পরিচালক মো. শাহ আলম ও অথরাইজড অফিসার মো. নুরুজ্জামান জহির।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন। পরে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে ডিএসসিসি’র পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ধ্বংসস্তূপ সরাতে কাজ শুরু করেন।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগে চুড়িহাট্টার হাজী ওয়াহেদ ম্যানসনে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকেই বলছেন, ওয়াহেদ ম্যানসনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পিকআপের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত। কেউ বলছেন, আগুনের সূত্রপাত হোটেল আমানিয়া থেকে। কেউ মনে করছেন, ওই ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কেমিক্যালের গোডাউন থেকেই শুরু আগুনের। তবে কেমিক্যালের গোডাউনে আগুন লাগার পর তা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের কয়েকটি ভবনে।

ভয়াবহ এ আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত ৬৭ জনের মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আহত হয়েছেন আরও ৪১ জন। এ ঘটনা তদন্তে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিরও আজ সকাল ১০টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের কথা রয়েছে।