ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৮ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


ধারালো অস্ত্রে খুন : অভিযোগের তীর স্বামীর দিকে

মেহেদির রঙ মোছার আগেই লাশ হলেন মীম


১৩ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:৫১

আপডেট:
৮ মে ২০২৫ ২২:৫০


মাত্র ১৮ দিন আগে বিয়ে হয়েছিল আসমা আকতার মীম ও মো. শামীমের। মীমের হাতে লাগানো বিয়ের সেই মেহেদির রঙ এখনও উজ্জ্বল। কিন্তু সেই মেহেদির রঙ মোছার আগেই লাশ হলো নববধূ মীম। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ডেমরার বাঁশেরপুলের একটি বাসা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মীমকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও পরিবারের ধারণা, নিহত মীমের স্বামী শামীম এই হত্যাকান্ড ঘটিয়ে পালিয়ে গেছে। পুলিশ শামীমকে গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। নিহতের গলা ও থুতনিতে কালো দাগসহ ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। পুলিশ মীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত মীমের বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. হবি গাজী সময়ের আলোকে বলেন, ১৮ দিন আগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চাঁনপাড়ার বাসিন্দা মোটর মেকানিক মো. শামীমের সঙ্গে পারিবারিকভাবে মীমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর শনিবার সকালে মীম প্রথমবারের মতো একাকী ডেমরার বাঁশেরপুল এলাকায় বাবার বাসায় আসেন। এরপর মঙ্গলবার সকালে আসেন শামীম। তাদের ছোট ফ্ল্যাটের একটি কক্ষে নবদম্পতি অবস্থান করছিল। কিছু সময় পর কোনো সাড়া-শব্দ না পেয়ে বাসার অন্য লোকজন দরজায় ধাক্কা দিতেই খুলে যায়। আর তখনই দেখা যায় কক্ষের বিছানায় মীম রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু সেই কক্ষে শামীম ছিল না। মীমের গলা ও থুতনিতে ধারাল আঘাতের চিহ্ন দেখে স্বজনরা দ্রæত তাকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জানা যায়, তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে মীম ছিলেন সবার বড়। স্থানীয় একটি কলেজে এইচএসসির ছাত্রী ছিল। বিয়ের পর সে কলেজে যাওয়া থেকে বিরত ছিল। এদিকে মীমের এমন মর্মান্তিক ও ভয়ঙ্কর মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। মঙ্গলবার ঢামেক মর্গে আসা স্বজনরা সদ্য বিবাহিত মীমের এমন করুণ পরিণতি দেখে শোকে-কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বজনদের কান্নায় ওই এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
হত্যাকাÐের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিহতের বাবা হবি গাজী বলেন, ‘মাত্র ১৮ দিনের দাম্পত্য জীবনে মীম ও শামীমের মধ্যে কী এমন ঘটল তা আমরাও বুঝতে পারছি না। শনিবার মেয়ে আমার বাসায় আসলেও স্বামীর বিরুদ্ধে খারাপ কোনো কিছুই বলেনি। মঙ্গলবার সকালে যখন শামীম বাসায় আসে তখনও তারা স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু কেন সে এভাবে আমার মেয়েটাকে খুন করল বুঝতে পারছি না।’
ডেমরা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, মীমকে তার স্বামী খুন করে পালিয়ে গেছে বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। মীমকে শ^াসরোধসহ মারধরের চিহ্ন রয়েছে। মুখমÐল, গলা ও থুতনিতে রক্ত ছিল। এ ঘটনায় শামীমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনায় ডেমরা থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।