ঢাকা শনিবার, ৩রা মে ২০২৫, ২১শে বৈশাখ ১৪৩২


ভারতের গুদামে নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ, বাংলাদেশকে কেনার অনুরোধ


১৬ জানুয়ারী ২০২০ ১২:১৪

আপডেট:
৩ মে ২০২৫ ০৮:৪০

হঠাৎ করে রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়া ভারতই এখন বাংলাদেশের কাছে পেঁয়াজ বিক্রি করতে চাইছে। তবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়নি। 

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সরকারের চাহিদার ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানি করে বিপদে পড়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। রাজ্য সরকার পেঁয়াজ কিনতে না চাওয়ায় তা বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করতে চাইছে দেশটি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট’র প্রতিবেদনে বলা হয়, গুদামে থাকা পেঁয়াজ এখন পচতে শুরু করেছে। তাই নিরুপায় হয়ে ২২ টাকা কেজি দরে সেই পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণাও দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

গত সোমবার ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত রকিবুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দেশীয় চাহিদার ভিত্তিতে আমদানিকৃত পেঁয়াজ রাজ্য সরকাররা কিনতে রাজি না হওয়ায় বাংলাদেশকে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

advertisement

ওই বৈঠকে বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছে। নেপাল হয়ে আরও পেঁয়াজ দেশের বাজারে ঢোকার অপেক্ষায় আছে। সুতরাং বিনামূল্যে পরিবহনসহ ভারতের কিছু প্রণোদনা দেওয়া উচিত।

বৈঠকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভারতের জ্যেষ্ঠ এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ভারত বিদেশ থেকে মোট ৩৬ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির চুক্তি করেছে। ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটিতে ১৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ পৌঁছেছে। বিভিন্ন প্রদেশের সরকার আমদানিকৃত পেঁয়াজের মাত্র ৩ হাজার মেট্রিক টন নিয়েছে। বাকি পেঁয়াজ মুম্বাইয়ের জওহরলাল নেহরু বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, প্রতি মেট্রিক টন পেঁয়াজ ৫০ হাজার থেকে ৫৯ হাজার (৬০০ থেকে ৭০০ ডলারে) টাকায় আমদানি করেছে ভারত। এখন বাংলাদেশকে এসব পেঁয়াজ প্রতি মেট্রিক টন ৫৫০ থেকে ৫৮০ ডলারে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের ভোক্তা কল্যাণবিষয়ক মন্ত্রী রাম বিলাস পাসওয়ান জানান, আমদানিকৃত পেঁয়াজের মহারাষ্ট্র সরকার ১০ হাজার মেট্রিক টন, আসাম ৩ হাজার মেট্রিক টন, হরিয়ানা ৩ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন, কর্ণাটক ২৫০ মেট্রিক টন ও ওড়িশ্যা প্রদেশ সরকার ১০০ মেট্রিক টন চাহিদা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।

গত নভেম্বর এবং ডিসেম্বরে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজি ১০০ রুপি পেরিয়ে যাওয়ার পর এসব রাজ্য এই নিত্যপণ্যটি আমদানি করতে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল। এখন তারা আমদানি করা পেঁয়াজের উচ্চমূল্য এবং স্বাদের ভিন্নতার অজুহাত দেখিয়ে সেগুলো নিতে রাজি হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বাংলাদেশকে না জানিয়ে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। পরে দেশটিতে সফরে গিয়ে এর সমালোচনা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের ওই সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করে বাংলাদেশ।