ঢাকা সোমবার, ১২ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


ক্যান্সার আক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধা বাবার চিকিৎসা দিতে অপরাগ বিএসএমএমইউ ,দাবি ছেলের!


২৮ মার্চ ২০২০ ০৭:০১

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২০ ০৭:১০

অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে চিকিৎসাসেবা দেবে সরকার। অথচ সেই বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল-মিয়া হালদার। এদিকে ছেলের দাবি , বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ( বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকরা তার বাবাকে চিকিৎসা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেছে কোন কারণ ছাড়াই।

এবিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল-মিয়া হালদার ছেলে রাসেল মাটি। এনিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ডাক্তাদের নিয়ে চলছে আলোচনা এবং একই সাথে সমালোচনাও ।

আমাদের দিন পাঠকদের জন্য হুবুহু স্টাটাসটি তুলে ধরা হলো।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসসালামু আলাইকুম,
#আমি রাসেল আহমেদ, ৩৪ তম বিসিএস এর মাধ্যমে সবুজবাগ সরকারি কলেজ, ঢাকাতে মার্কেটিং বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছি। মোবাইল: 01915-721868, 01780-161148
#১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমার দাদা এবং মেঝো কাকা রাজাকারদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হয়েছেন, এছাড়াও আমার বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে পাকিস্তানি ও দেশীয় দোসরদের হাত থেকে এদেশকে মুক্ত করেন। বর্তমানে তিনি টংগীবাড়ী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সহকারী কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
#ওনার মুক্তিযোদ্ধার প্রমাণপত্রের বিস্তারিত নিম্নরুপ:
নাম: লাল-মিয়া হালদার
(বীর মুক্তিযোদ্ধা)
পিতার নাম: মৃত বান্দু হালদার
গ্রামঃমিতারা
ইউনিয়নঃদিঘীরপাড়
উপজেলাঃ টঙ্গীবাড়ী
জেলাঃমুন্সীগঞ্জ
গেজেট -১৩৭৬
লাল মুক্তিবার্তাঃ০১০৩০৫০২০২
ভারতীয় তালিকাঃপদ্মা(৫৭১)
#আমার বাবা শুধু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাই না উনি দীর্ঘ ৪০ বছর দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে শিক্ষকতা করে লাখো শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণের সহযোগী হিসেবে কাজ করে গেছেন।
#দেশের সেই বীর সন্তান আমার বাবা এই স্বাধীনতার মাসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরেন, সেজন্যই বিগত ২২ দিন যাবৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. গোলাম মাওলা চোধুরী স্যারের অধীনে ভর্তি ছিলেন, স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী তার শরীরের নানান পরীক্ষানিরীক্ষা করান। অবশেষে তার ডান কিডনিতে টিউমার ধরা পরে এবং সেটা ক্যান্সারে রুপান্তরিত হয়ে যায়। ডাক্তারের পরামর্শ ওনাকে যত দ্রুত সম্ভব অপারেশনের মাধ্যমে ডান কিডনি ফেলে দিতে হবে এবং তারপর পরবর্তী চিকিৎসা নিতে হবে তা না হলে ওনার জীবন খুব দ্রুতই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। তার রুম নাম্বার-৪২৭ এবং বেড নাম্বার-১৭।
#আমরা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অপারেশনের সকল প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আমার বাবার রক্তের গ্রুপ B- নেগেটিভ, খুব কষ্টে রক্ত যোগার করেছিলাম,এখন যখন অপারেশনের জন্য সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা হয়েছে কিন্তু ডাক্তার বলছেন তারা অপারেশন করতে পারবে না। বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এমনকি পিজি হাসপাতালের পরিচালক স্যার অনুরোধ করার পরেও আমার বাবার অপারেশন করাতে পারলাম না। অতপর বাধ্য হয়ে বাবাকে অপারেশন না করিয়েই গ্রামের বাড়ি নিয়ে আসতে হয়েছে।
#এমতাবস্থায় অল্প কিছুদিনের মধ্যে জরুরীভিত্তিতে আমার বাবার অপারেশন যদি না করানো হয় তাহলে আমার বাবার জীবন মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে পরবে। আমার বাবার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে তার দায়ভার কে নিবে.?.
#আমি চাই আমার বাবার অপারেশন যাতে খুব শীঘ্রই জরুরীভিত্তিতে যথাসময়ে করানোর ব্যবস্থা করা হয়, সে যেমন দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে দেশকে স্বাধীন করেছেন, তাকেও যেনো সুস্থ জীবনের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে পিজি হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট সকলের সহিযোগীতা কামনা করছি।
#মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের এই সংকটময় সময়ে আপনার কাছে যথাসময়ে আমার বাবার অপারেশনের ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা কামনা করছি। জাতির একজন বীর সন্তানকে তার ন্যায্য সেবা পাবার সুযোগ করে দিন।
ধন্যবাদ আপনাকে বিশ্ব মানবতার নেত্রী,