৯৯৯-এ কল করে সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাহায্য প্রার্থী

জরুরি নাগরিক সেবায় চালু করা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন সাহায্য প্রার্থী আসাদুল হক নামের এক ব্যক্তি।
শনিবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তি।
অভিযোগকারী ভেড়ামারা উপজেলার জুনিয়াদাহ এলাকার ফয়জুল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা আবু বক্করের ছেলে আসাদুল হক।
গত ১২ মার্চ তার ওপর ওই হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের আইসি উপ-পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেনসহ হামলাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ মার্চ সকাল ৯টার দিকে জুনিয়াদাহ এলাকায় তার বাড়ির পাশে পদ্মা নদীতে হঠাৎ করে গোলাগুলির শব্দ হয়। গুলির শব্দ শুনে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে সাহায্য চেয়ে না পাওয়ায় পরে জাতীয় জরুরি সেবা সার্ভিস ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন আসাদুল।
তিনি বলেন, ‘এরপর সেখান থেকে আমার সঙ্গে ভেড়ামারা থানার ডিউটি অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হয়। সন্ত্রাসীরা ৪টি পিস্তল, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি করছিল। সেটি ছিল ভেড়ামারা থানার কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের আওতায়।’
আসাদুল বলেন, ‘ভেড়ামারা থানার ডিউটি অফিসার আমার নাম ও মোবাইল নম্বরটি তৎক্ষণাৎ কুচিয়ামোড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ জাহাঙ্গীরকে দেন। আমার নম্বরে কল দেওয়ার আগেই কোনোভাবে ওই পুলিশ অফিসার সন্ত্রাসীদের সতর্ক করে দেন এবং আমার নাম-পরিচয় তাদের কাছে বলে দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরে যেতে বলেন।’
তিনি বলেন, ‘পরে আমার নম্বরে দারোগা জাহাঙ্গীর কল দিয়ে হুমকির সুরে বলেন- তুই ফাজলামি করিস, আমি খবর নিয়ে দেখেছি এলাকায় কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ কথা বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।’
আসাদুল বলেন, ‘এরপর কিছুক্ষণের মধ্যেই সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থলের পাশে আমাকে রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে। আশপাশের কৃষকরা ছুটে এসে লাঠি দিয়ে তাদের মারধর শুরু করলে তারা পালিয়ে যায়। আমাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনরা।’
অভিযোগে আলমগীর, মামুন, মিলন, শাকিল, রুবেল, আসমান, রাকিবসহ আরও অজ্ঞাতদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এদের সবার বাড়ি ভেড়ামারা উপজেলার বাহাদুরপুর এবং পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলায়।
এসব বিষয়ে লিখিত অভিযোগ ভেড়ামারা থানায় দিতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেছে বলেও উল্লেখ করেছেন আসাদুল।
তিনি বলেন, ‘ভেড়ামারা থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো মীমাংসা করার চাপ সৃষ্টি করায় মনে হচ্ছে- পুলিশ সন্ত্রাসীদের কাছে অসহায়, না হয় পুলিশের সঙ্গে আঁতাত করেই সন্ত্রাসীরা আমার ওপর হামলা করেছে।’
লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার খায়রুল আলম বলেন, ‘আসাদুল হক নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ভেড়ামারা থানাকে নির্দেশ দিয়েছি মামলা করতে। ওটা মামলা হয়ে গেছে। তবে এ ক্ষেত্রে পুলিশের কোনো অবহেলা ছিল কিনা সেটাও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’