ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০


ফেসবুক লাইভে মেয়রকে ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী বলায়

সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করলেন মেয়র


৩০ মার্চ ২০২৩ ০৮:০৩

আপডেট:
২৮ মার্চ ২০২৪ ১৯:৪৮

জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানু ও শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূর হোসেন আবাহনী

জামালপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন ছানুকে ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসী বলায় শহর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূর হোসেন আবাহনীকে মেয়রের বাসায় বেধে সাড়ে ৪ ঘন্টা আটকিয়ে রেখে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এসময় তার হাত পা ভেঙ্গে চুল এবং চোখের ভ্রু কেটে দে্ওয়া হয়েছে্। এমনকি মিথ্যা মামলা দিয়ে আহত নূর হোসেন আবাহনীকে হাজতে রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।

স্থানী সূত্রে জানা যায়, আহত ওই ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নূর হোসেন আবাহনী ফেসবুক লাইভে এসে মেয়রের জমি দখল সংক্রান্ত বিষয় তুলে ধরেন । মেয়রের অপকর্মের বিরুদ্ধে জনগণকে রাস্তায় দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি পৌরসভার মধ্যবর্তী নির্বাচনও দাবি করেছেন। 

বুধবার (২৯ মার্চ) দুপুরে ওই ছাত্রলীগ নেতা তার ব্যক্তিগত ফেসবুক থেকে লাইভে গিয়ে এসব কথা বলেন।

২ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের লাইভে তাকে বলতে শোনা যায়, 'প্রিয় জামালপুরবাসী, আজকে আপনাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখাবো। আপনারা অতীতে দেখেছেন যে কিভাবে পাকিস্তানিরা আমাদের শাসন ও শোষণ করেছে। এখন আপনারা দেখতে পারবেন পাথালিয়া পশ্চিমপাড়া যে কিভাবে শাসন এবং শোষণ হচ্ছে। সেই পাকিস্তানি স্টাইলে, সেই স্টাইলটা আপনারা দেখতে পারবেন।’

একটি জায়গা দেখিয়ে আবাহনী বলেন, ‘এদিকে যা দেখতেছেন এটা হচ্ছে যে আমাদের মেয়র মহোদয় ছানোয়ার হোসেন ছানু বাড়ি করবে বলে, এই জমিগুলা নিয়েছে। প্রথমে সে (মেয়র) স্টাইলটা কি করছে, সে (মেয়র) স্টাইলটা করেছে, তার বাবার একমাত্র একটা সেচ পাম্প ছিল, ওই সেচ পাম্পটা দিয়ে তিনি কৃষকদের আগে পানি দেয়া বন্ধ করেছে। পানি দেয়া বন্ধ করার ফলে আমাদের কৃষক যারা ছিল, তারা সেখানে আবাদ করতে পারে নাই। আবাদ না করার ফলে ওই যে ছোট ছোট খুঁটিগুলা দেখতেছেন এই খুঁটিগুলা লক্ষ্য করে সে একদমই বাছাই করে নিয়েছে যে সে এইভাবেই জমিজমা দখল করে নেবে। মাঝখানে কার জমি পড়েছে, সেটা তার দেখার বিষয় নাই।’

লাইভে তিনি বলেন, ‘লোকজন নীরবে নিভৃতে কেঁদে মরছে। কিন্তু বিচার করবে কে? বিচারের বাণী আজকে কোথায় আছে? কেউ নাই বিচার করার। সুতরাং আমি জনগণ হিসেবে আপনাদেরকে বললাম যে, এই বিচার জননেত্রী শেখ হাসিনাই একমাত্র করতে পারেন। শেখ হাসিনার কাছে আমরা আশা রাখলাম। এরকম ভূমি সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু মেয়র আমরা চাই না। অচিরেই মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়া হোক এবং কি আমি একজন জনগণ হিসেবে এইটুকু প্রস্তাব করলাম, এই মেয়রের প্রতি আমরা জনগণ অনাস্থা নিয়ে ফেলেছি। সে যেভাবে ভূমি দস্যুতা শুরু করেছে তার সঙ্গে আমাদের রাজনীতি করা আওয়ামী লীগের সম্পর্ক থাকা কোনোভাবেই সম্ভব না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং আপনারা দেখতে পারছেন, এই যে এই দিকটায় দেখুন, পুরোটাই সে দখল করে নিয়ে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে কথা কেউ বলার সাহস পায় না। সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলেছে, মাদক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। একেক ধরনের একেক সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। যদি আপনারা বিশ্বাস না করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে যতটুকু তথ্য আছে আপনারা টান দেন, আপনারা ইনশাআল্লাহ সবই বুঝতে পারবেন। সে কি ধরনের জঘন্যতম কাণ্ডকারখানা করেছে। আমরা চাই না এ ধরনের মেয়র আমাদের নেতৃত্বে থাকুক। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন নির্বাচন চাচ্ছি শেখ হাসিনার কাছে। এবং অচিরেই যেন এই নির্বাচন দেয়া হয় এবং তার মতো মেয়রের প্রতি অনাস্থা আনছি। ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন। জামালপুরবাসী সোচ্চার হোন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা শিখেন। দাঁড়িয়ে যান, আপনার একটা চুল তো দূরের কথা, বা**ও ছিঁড়তে পারবে না! ধন্যবাদ সবাইকে। আসুন সকলে মিলে একাত্মবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।'
সাম্প্রতিক সময়

পবিত্র রমজান মাসে জামালপুর পৌর এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। একদিকে পানির স্তর নিচে মেনে যাওয়ায় টিউবওয়েল থেকে পানি উঠছে না। অন্যদিকে পৌরসভার সরবরাহকৃত পানি দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত হওয়ায় সাংসারিক কাজে ব্যবহার করতে পারছেন না এখানকার বাসিন্দারা।