ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


নতুন জীবন পেলেন নারী ক্রিকেটার চামেলী,কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রীর কাছে!


১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:৫৪

আপডেট:
১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৪২

নতুন জীবন পেলেন নারী ক্রিকেটার চামেলী,চির কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রীর কাছে!

নতুন জীবন পেয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় চামেলী খাতুন। একই সাথে প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তিনি।

প্রভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে শীর্ষ পর্যায়ের স্পর্শ বেসরকারি অর্থপেডিক হাসপাতালে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় চিকিৎসা শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বেসরকারি বিমান জেট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে দেশে ফিরেছেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বেসরকারি বিমান নভোএয়ারের একটি ফ্লাইটে রাজশাহী হযরত শাহমখদুম বিমানবন্দরে পৌঁছান।

ফেরেন রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়া এলাকার নিজ বাড়িতে।তিন মাস পর আবার তাকে চেকআপের জন্য যেতে হবে ভারতে। আর এ সবই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক সহযোগিতায়। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত চিকিৎসার ব্যয়ের পাঁচ লাখ টাকাও দেওয়া হয়েছে তাকে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বুধবার সকালে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান এই অলরাউন্ডার।চামেলী জানান, আগের তুলনায় অনেকটা সুস্থবোধ করছেন এখন। তবে দীর্ঘ এই জার্নির কারণে পা কিছুটা ফুলেছে। তবে তা সেরে যাবে। চিকিৎসকের পরামর্শে ধীরে ধীরে চলাফেরার চেষ্টাও করছেন।

চাপ্রধান মন্ত্রীর প্রতি চির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চামেলী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতার কারণে নতুনভাবে জীবন ফিরে পেলাম। নাহলে ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা তার পক্ষে করা সম্ভব হতো না।ভারতের ব্যাঙ্গালুরুর স্পর্শ অর্থপেডিক হাসপাতালে চামেলীর ডান পায়ের লিগামেন্টের অস্ত্রোপচার হয় গত মাসের ২৬ নভেম্বর। দুদিন হাসপাতালে অবজারভেশেনে থাকার পর ড্রেসিংসহ অন্যান্য চিকিৎসার জন্য ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হয় তাকে। ৮ ডিসেম্বর ওই হাসপাতালে সেলাই কাটার কথা থাকলেও অপারেশন স্থানের সার্বিক বিবেচনা করে আগামী ২২ ডিসেম্বর সেলাই কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাকে।

স্থানীয় হাসপাতালেই তা কাটা হবে।স্পর্শ হাসপাতালের অর্থপেডিকের ডা. প্রশান্ত তেজওয়ানির বরাত দিয়ে তিনি জানান, পায়ের পরিস্থিতি উন্নতির দিকে রয়েছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও এক বছর সময় লাগবে। বর্তমানে স্ট্রেচারে ভর দিয়ে অন্য সদস্যের সাহায্য নিয়েa চলাফেরা করতে হবে। এভাবে চলবে ছয় মাস। তারপর স্বাভাবিকভাবে পা ফেলতে পারবেন। এ সময়ের মধ্যে তাকে নিয়মিত ওষুধ সেবন করতে হবে এবং কিছু ফিজিওথেরাপি নিতে হবে। আগামী বছরের মার্চে আবারো তাকে যেতে হবে ভারতের ওই হাসপাতালে চেকআপের জন্য। এই তিন মাসের সার্বিক চিকিৎসার সবকিছু বুঝিয়ে দিয়েছেন পদ্মা পাড়ের এই মেয়েকে।

এক বছর পর মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান পাপন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশাসহ শুভাকাঙ্ক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চামেলী বলেন, সবার সার্বিক সহযোগিতার কারণে নতুনভাবে জীবন ফিরে পেলেন। নাহলে ব্যয়বহুল এ চিকিৎসা তার পক্ষে করা সম্ভব হতো না।২০১১ সালে চামেলীর পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে অবস্থান করছিলেন রাজশাহী মহানগরীর দরগাপাড়ার জরাজীর্ণ বাড়ির একটি ঘরে। বিষয়টি পরিবর্তন ডটকমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে অনেকেই তার পাশে এসে দাঁড়ান।

এ সময় তার চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গত ২ নভেম্বর রাজশাহী থেকে ঢাকা নিয়ে ভর্তি করা হয় জাতীয় অর্থপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতালে) ২১৬নং কেবিনে। সেখানে প্রাথমিক পর্যায়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালেই চিকিৎসার প্রস্তুতি শরু হয়। কিন্তু চামেলী দাবি করেন ভারতে চিকিৎসার জন্য। এরপর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় ভারতে। গত ২৩ নভেম্বর চিকিৎসার জন্য ভারতের ব্যাঙ্গালুরু যান।

সেখানকার বেসরকারি স্পর্শ অর্থপেডিক হাসপাতালে ভর্তি হন ২৫ নভেম্বর।বাংলাদেশ জাতীয় নারী দলের হয়ে ১৯৯৯ থেকে ২০১১ পর্যন্ত মাঠ মাতিয়েছেন চামেলী খাতুন। ২০১০ সালের এশিয়া কাপের রানার আপ হওয়া দলের হয়ে মাঠ মাতান এই দাপুটে ক্রিকেটার। এর বাইরে ঢাকা বিভাগে খেলেছেন টানা। দুই মৌসুম শেখ জামালের ক্যাপ্টেন হিসেবে সামনে থেকে টেনে নিয়ে গেছেন দলকে। সেই তিনিই পরাস্ত হন ইনজুরিতে। এখন তার চিকিৎসা চলছে।