ঢাকা সোমবার, ১২ই মে ২০২৫, ৩০শে বৈশাখ ১৪৩২


বিদ্যুতের লাখো কোটি টাকা লুটের নথি দুদকের কবজায়


১২ মে ২০২৫ ১০:৫৪

আপডেট:
১২ মে ২০২৫ ১৪:৩১

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের তিন মেয়াদে ১৫৮টিরও বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুকূলে পরিশোধিত লাখো কোটি টাকার বিলসহ যাবতীয় নথি এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কবজায়। সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ঘুষ গ্রহণ, স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্রকল্প পাস করানো, সরকারি জমি দখল ও ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে এসব নথি তলব করে দুদক। গত ৬ মে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) চেয়ারম্যানের কাছে এসব নথি তলব করেন অনুসন্ধান দলের দলনেতা ও উপপরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন। এরই মধ্যে এসব নথি দুদকে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিউবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিউবোর চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা দুদকের চিঠি পেয়েছি। দুদক থেকে চিঠি দিয়ে যেসব নথিপত্র চাওয়া হয়েছে সেগুলো তাদের সরবরাহ করা হয়েছে। দুদককে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি। আমরাও চাই বিদ্যুৎ সেক্টরে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’

সংশ্লিষ্ট অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে বিদ্যুতের ক্যাপাসিটি চার্জের নামে চলেছে হরিলুট। বিনা টেন্ডারে দায়মুক্তি আইন বা বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন ২০১০ করে আওয়ামী লীগ সমর্থক ব্যবসায়ীদের উচ্চমূল্যের বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৮৩০ কোটি ডলার। টাকার হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় পৌনে ৪ লাখ কোটি টাকা। শুধু ক্যাপাসিটি চার্জের নামেই আত্মসাৎ হয়েছে ১ লাখো কোটি টাকা। অন্যদিকে বিদ্যুৎ খাতের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় নিম্নমানের যন্ত্রাংশ ক্রয় এবং ভূমি অধিগ্রহণ এবং রক্ষণাবেক্ষণে ভয়াবহ অনিয়ম ও লুটপাট হয়েছে। বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ সক্ষমতায় ব্যবহার করা হবে—এমন শর্তে লাইসেন্স দেওয়া হয়। কিন্তু এসব কেন্দ্র চলেছে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। কেন্দ্রগুলো বছরের ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ সময় বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে অলস বসে ছিল। প্রয়োজন না থাকলেও অতিরিক্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের অনুমোদন দেওয়া হয়। উচ্চমূল্যের এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে বছরের পর বছর ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের পকেটে ঢোকে।

২০০৯ সাল আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের আগে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকার দরপত্রের মাধ্যমে ৮ কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের অনুমতি দেয়। বিনা দরপত্রে ৩২টি কুইক রেন্টাল কেন্দ্র নির্মাণ করে। দরপত্র এড়াতে ২০১০ সালে জাতীয় সংসদে দুই বছরের জন্য পাস করা হয় জরুরি বিশেষ আইন। পরে আইনটির মেয়াদ কয়েক দফা বাড়িয়ে সর্বশেষ ২০২৬ সাল পর্যন্ত করা হয়। এই আইনের অধীনে ৭২টি রেন্টাল ও ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) কেন্দ্রের অনুমতি দেওয়া হয়। বিনা দরপত্রে প্রতিযোগিতা ছাড়াই এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের বড় অংশই পেয়েছেন তৎকালীন সরকারের ঘনিষ্ঠ ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীরা। এর মধ্যে সামিট, ওরিয়ন, দেশ এনার্জি, ডরিন পাওয়ার, ইউনাইটেড, এনার্জিপ্যাক অন্যতম। বিনা দরপত্রে বিদ্যুৎকেন্দ্র পাওয়ার শীর্ষে ছিল সামিট গ্রুপ। সামিটের সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ভাড়া পেয়েছে ১ হাজার ৯৫৭ কোটি টাকা। দ্বিতীয় স্থানে আছে ইউনাইটেড গ্রুপের ৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র, তারা পেয়েছে ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। কনফিডেন্স গ্রুপ বিনা দরপত্রে পেয়েছে ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। তারা পেয়েছে ৯৬২ কোটি টাকা। কেন্দ্র ভাড়া পাওয়ার ক্ষেত্রে পঞ্চম স্থানে আছে বাংলাক্যাটের ৪টি বিদ্যুৎকেন্দ্র। ষষ্ঠ নামটি সিঙ্গাপুরভিত্তিক সেম্বকর্পের। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এপিআর এনার্জি পেয়েছে ৬৮০ কোটি টাকা। নবম স্থানে ছিল ডরিন গ্রুপের ছয় বিদ্যুৎকেন্দ্র। দশম স্থানে দেশ এনার্জির চার বিদ্যুৎকেন্দ্র ভাড়া পায় ৫১৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ডরিন পাওয়ারের মালিক ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি প্রয়াত নূরে আলম সিদ্দিকীর ছেলে ও ঝিনাইদহ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী তাহজীব আলম সিদ্দিকী। দেশ এনার্জি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রতিষ্ঠান।

দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চালুকৃত ১৫৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করেছে। কমিশনের চিঠিতে বিউবোর সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্পাদিত চুক্তি, পাওয়ার পারচেস এগ্রিমেন্ট, ইম্পিলিমেন্টেশন এগ্রিমেন্টসহ সব চুক্তির নথি চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর অনুকূলে পরিশোধ করার যাবতীয় বিল ও বকেয়া বিল সংক্রান্ত নথিসহ অন্যান্য যাবতীয় নথি চাওয়া হয়েছে। দুদকের চিঠিতে ভারতের বাহারামপুর থেকে এক হাজার মেগাওয়াট ও ত্রিপুরা থেকে ১৬০ মেগাওয়াট ও ঝাড়খণ্ডে আদানি পাওয়ার থেকে ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির নথিও এখন দুদকের কবজায়।

২০০৯ সালের ১২ কেন্দ্র

আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় এসেই ২০০৯ সালে বিউবি ও আরইবির আওতায় গ্যাসচালিত ১২ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করে। সেগুলো হচ্ছে- হবিগঞ্জ এসআইপিপি, শাহজী বাজার রেন্টাল (১৫ বছর মেয়াদি), ফেনী এসআইপিপি, উল্লাপাড়া এসআইপিপি (সামিট), কুমারগাঁও রেন্টাল (দেশ এনার্জি ১৫ বছর মেয়াদি), মহিপাল ফেনী এসআইপিপি, মাওনা গাজীপুর এসআইপিপি (সামিট), বাড়বকুণ্ড এসআইপিপি (রিজেন্ট), রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ এসআইপিপি (সামিট), জাঙ্গালিয়া কুমিল্লা এসআইপিপি (সামিট), ভোলা রেন্টাল (ভেঞ্চার), ফেঞ্চুগঞ্জ রেন্টাল (১৫ বছর মেয়াদি)।

২০১০ সালের ৯টি

২০১০ সালে স্থাপিত যে ৯টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আশুগঞ্জ রেন্টাল (প্রিশিসান এনার্জি), শিকলবাহা রেন্টাল (এনার্জিস), ঠাকুরগাঁও রেন্টাল (আরজেড পাওয়ার), খুলনা কুইক রেন্টাল (এগ্রিকো), ঘোড়াশাল কুইক রেন্টাল (এগ্রিকো), শিকলবাহা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং, সিদ্ধিরগঞ্জ দুই গুণ ১২০ মেগাওয়াট (২য় ইউনিট), পাগলা ৫০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (ডিপিএ) ও ভেড়ামারা ১১০ মেগাওয়াট রেন্টাল (কোয়ান্টাম পাওয়ার)।

২০১১ সালে ২৩টি

আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালে অনুমোদন দেওয়া ২৩ বিদ্যুৎকেন্দ্রে পরিশোধ করা বিলসহ নথি তলব করা হয়েছে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- সিদ্ধিরগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (দেশ এনার্জি), বি-বাড়িয়া ৭০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র (এগ্রিকো), মদনগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (সামিট), আশুগঞ্জ ৫০ মেগাওয়াট, মেঘনাঘাট ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (আইইএল), ঘোড়াশাল ৭৮ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (ম্যাক্স পাওয়ার), নোয়াপাড়া ৪০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (খানজাহান আলী), আশুগঞ্জ ৮০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (এগ্রিকো), খুলনা ১১৫ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (কেপিসিএল-২), আশুগঞ্জ ৫৩ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (ইউনাইটেড পাওয়ার), সিদ্ধিরগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (ডাচ বাংলা), নোয়াপাড়া ১০৫ মেগাওয়াট রেন্টাল (কোয়ান্টাম পাওয়ার), বাঘাবাড়ী ৫০ মেগাওয়াট পিকিং, ফেঞ্চুগঞ্জ ৯০ মেগাওয়াট সিসিপিপি, বেড়া ৭০ মেগাওয়াট পিকিং, দাউদকান্দি ৫০ মেগাওয়াট পিকি, ফরিদপুর ৫০ মেগাওয়াট পিকিং, গোপালগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট পিকিং, বগুড়া ২০ মেগাওয়াট রেন্টাল (এনার্জিপ্রিমা), হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং, সিদ্ধিরগঞ্জ ২ গুণ ১২০ মেগাওয়াট পিকিং (১ম ইউনিট) ও সাংগু দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট পিকিং বিদ্যুৎকেন্দ্র।

২০১২ সালে ১১টি

এ বছর অনুমোদন দেওয়া ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- আমনুরা ৫০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (সিনহা পাওয়ার), ফেঞ্চুগঞ্জ ৫০ মেগাওয়াট রেন্টাল (এনার্জিপ্রিমা), চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি, জুলডা ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (একর্ন ইনফ্রা, সার্ভিস লিমিটেড), কেরানীগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (পাওয়ার প্যাক), সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট, কাটাখালী ৫০ মেগাওয়াট কুইক রেন্টাল (নর্দান পাওয়ার), গাজীপুর ৫০ মেগাওয়াট, সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট, সান্তাহার ৫০ মেগাওয়া পিকিং ও কাটাখালী ৫০ মেগাওয়াট পিকিং।

২০১৩ সালের ৫টি

আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সালে অনুমোদন দেওয়া ৫টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নথি তলব করেছে। সেগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রামের রাউজান ২৫ মেগাওয়াট, খুলনা ১৫০ মেগাওয়াট জিটি, আশুগঞ্জ ৫১ মেগাওয়াট (মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড) ও হরিপুর ৩৬০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল।

২০১৪ সালে ৬টি

আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন দেওয়া ২০১৪ সালের ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের যাবতীয় নথি তলব করেছে দুদক। সেগুলো হচ্ছে শাজাহানউল্লাহ্ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, নাটোর ৫০ মেগাওয়াট (রাজ-লংকা পাওয়ার লি.), বারাকা-পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম ৫০ মেগাওয়াট (বরকতউল্লাহ ডায়নামিক), মেঘনাঘাট-২ ৩৩৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট-সামিট পাওয়ার), গগনগর ১০২ মেগাওয়াট (ডিজিটাল পাওয়ার অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস), আপগ্রেডেশন অব সিরাজগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং-টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল ও ঘোড়াশাল ১০৮ মেগাওয়াট (রিজেন্ট এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার)।

২০১৫ সালে ১০টি

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১০১৫ সালে ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করে, যার নথি তলব করেছে দুদক। সেগুলো হচ্ছে— কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া ৫২ মেগাওয়াট (লাকধানবি বাংলা পাওয়ার লি.), চট্টগ্রামের পটিয়া ১০৮ মেগাওয়াট (ইসিপিভি চিটাগাং লিমিটেড), মুন্সীগঞ্জের কাঠপট্টি ৫০ মেগাওয়াট (সিনহা পিপলস এনার্জি লি.), আশুগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট), আশুগঞ্জ ১৯৫ মেগাওয়াট মডুলার (ইউনাইটেড পাওয়ার), মেঘনাঘাট-২-এর ৩৩৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট-সামিট পাওয়ার), বিবিয়ানা-২ এর ৩৪১ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট-সামিট পাওয়ার ও জিইসি কনসোর্টিয়াম) গাজীপুরের কড্ডা ১৫০ মেগাওয়াট, ভোলা ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি, আশুগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট-সামিট পাওয়ার ও জিইসি কনসোর্টিয়াম) ও বিবিয়ান-২-এর ৩৪১ মেগাওয়াট (এসটি ইউনিট, সামিট পাওয়ার ও জিইসি কনসোর্টিয়াম)।

২০১৬ সালে ৮টি

আওয়ামী লীগ সরকারের অনুমোদন দেওয়া ২০১৮ সালের যে ৮টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করেছে দুদকে সেগুলো হচ্ছে, নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট (সামিট পাওয়ার), বরিশাল ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (সামিট পাওয়ার), ঢাকার নবাবগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (ঢাকা সাউদান পাওয়ার), আপগ্রেডেশন অব খুলনা ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট-টু ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল, আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (দক্ষিণ), মানিকগঞ্জ ৫৫ মেগাওয়াট (ঢাকা নর্দান পাওয়ার জেনারেশন), শাহাজীবাজার ৩৩০ মেগাওয়াট সিসিপিপি ও জামালপুর ৯৫ মেগাওয়াট (পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা)।

২০১৭ সালে ৬টি

বিগত সরকারের সময় ২০১৭ সালে স্থাপন করা ৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে, বসিলা কেরানীগঞ্জ ১০৮ মেগাওয়াট, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ৩৬০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট), আশুগঞ্জ ৪৫০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (উত্তর), কুশিয়ারা ১৬৩ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট-কুশিয়ারা পাওয়ার), সরিষাবাড়ী ৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট ও শিকলবাহা ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (ডুয়েল ফুয়েল)।

২০১৮ সালে ২০টি

বিগত সরকার ২০১৮ সালে অনুমোদন দেওয়া ২০টি সরকারি-বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের তথ্য চেয়েছে দুদক। সেগুলো হচ্ছে, ভেড়ামারা ৩৬০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট), বড়পুকুরিয়া ২৭৫ মেগাওয়াট (তৃতীয় ইউনিট), মুন্সীগঞ্জের কমলাঘাট ৫০ মেগাওয়াট (বেনকো এনার্জি), ঘোড়াশাল ৩৬৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি, সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (২য় ইউনিট), যশোরের নোয়াপাড়া ১০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও বাংলাট্রেক), কুশিয়ারা ১৬৩ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি-কুশিয়ারা পাওয়ার কোম্পানি), দাউদকান্দি ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (ফাস্ট-ট্রেক ও বাংলাট্রেক), সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট), গাজীপুরের কড্ডা ৩০০ মেগাওয়াট ইউনিট-২ (ফাস্ট-ট্রেক ও সামিট পাওয়ার), কেরানীগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও ১০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও এগ্রিকো), ময়মনসিংহ ২০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও ইউনাইটেড পাওয়ার), কেরানীগঞ্জের আওরাহাটি ১০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও এগ্রিকো), গাজীপুরের কড্ডা ১৪৯ মেগাওয়াট (ইউনিট-১ সামিট পাওয়ার), সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (তৃতীয় ইউনিট জিটি), পানগাঁও কেরানীগঞ্জ ৩০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও এপিআর), টেকনাফ, কক্সবাজার ২০ মেগাওয়াট সৌর পার্ক (টেকনাফ সোলারটেক এনার্জি লিমিটেড, সিরাজগঞ্জ ৪০০ প্লাস ১০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (জিটি ইউনিট-এসএনডব্লিউপিসিএল), খুলনার রূপসা ১০৫ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও ওরিয়ন রূপসা পাওয়ার), চাদঁপুর ২০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও দেশ এনার্জি চাঁদপুর লি.), চট্টগ্রামের জুলদা ১০০ মেগাওয়াট-ইউনিট-৩ (ফাস্ট-ট্রেক ও একর্ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার) ও আশুগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্রেক ও মিডল্যান্ড পাওয়ার)।

২০১৯ সালে ১৫টি

দুদক ২০১৯ সালের যে ১৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করেছে, সেগুলো হচ্ছে সিরাজগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (তৃতীয় ইউনিট এসটি), বিবিয়ানা ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (তৃতীয় ইউনিট-জিটি ইউনিট), বাঘাবাড়ী ২০০ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্র্যাক ও প্যারামাউন্ট বিট্রাক), জামালপুর ১১৫ মেগাওয়াট (ইউনাইটেড পাওয়ার), বগুড়া ১১৩ মেগাওয়াট ইউনিট-২ (ফাস্ট-ট্র্যাক ও কনফিডেন্স পাওয়ার), সিরাজগঞ্জ ৪০০ প্লাস ১০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিটও এসএনপিসিএল), বাগেরহাটের মধুমতি ১০০ মেগাওয়াট, শিকলবাহা ১০৫ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্র্যাক ও বারাকা পতেঙ্গা-রয়েল হোমস), গাজীপুর ১০০ মেগাওয়াট, কাপ্তাই ৭ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ, আনোয়ারা চট্টগ্রাম ৩০০ মেগাওয়াট (ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ লি.), মাঝিপাড়া, তেঁতুলিয়া ৮ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র, রংপুর ১১৩ মেগাওয়াট (কনফিডেন্স পাওয়ার), শিকলবাহা, চট্টগ্রাম ১১০ মেগাওয়াট (কর্ণফুলী পাওয়ার), শিকলবাহা চট্টগ্রাম ৫৪ মেগাওয়াট (জোডিয়াক পাওয়ার), সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট), বিবিয়ানা ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (তৃতীয় ইউনিট-এসটি), বগুড়া ১১৩ মেগাওয়াট (ইউনিট-১) (কনফিডেন্স পাওয়ার), ফেনী ১১৪ মেগাওয়াট (লাকধানাভি) ও নোয়াখালীর চৌমুহনী ১১৩ মেগাওয়াট (এইচ এফ পাওয়ার)।

২০২০ সালে ৬টি

পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২০ সালে অনুমোদন দেওয়া যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের নথি তলব করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে আপগ্রেডেশন অব সিলেট ১৫০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট টু ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি, জুলদা, চট্টগ্রাম ১০০ মেগাওয়াট ইউনিট-২ (একর্ন ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিস লি.), পায়রা-২ ইনটু ৬৬০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (প্রথম ইউনিট), মেঘনাঘাট ১০৪ মেগাওয়াট (ওরিয়ন পাওয়ার সোনারগাঁও লি.), সুতিয়াখালী, ময়মনসিংহ ৫০ মেগাওয়াট সৌর (এইচডিএফসি সিন পাওয়ার) ও মানিকগঞ্জ ১৬২ মেগাওয়াট (ফাস্ট-ট্র্যাক ও মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশনস লিমিটেড) পায়রা, পটুয়াখালী পায়রা ১৫০ কয়লাভিত্তিক (দ্বিতীয় ইউনিট) ও টাঙ্গাইল ২২ মেগাওয়াট (টাঙ্গাইল পল্লী পাওয়ার জেনারেশন)।

২০২১ সালে ১০টি

বিগত সরকার ২০২১ সালে চালু করা যেসব কেন্দ্রের নথি তলব করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে পটিয়া চট্টগ্রাম ১১৬ মেগাওয়াট (আনলিমা এনার্জি), পটুয়াখালী ১৫০ মেগাওয়াট (ইউনাইটেড পায়রা পাওয়ার লি.), বিবিয়ানা দক্ষিণ ৩৮৩ মেগাওয়াট, শাহজিবাজার ১০০ মেগাওয়াট, ভৈরব ৫৪ মেগাওয়াট, (ভৈরব পাওয়ার লি.), মানিকগঞ্জ সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র, সিরাজগঞ্জ ৬ দশমিক ৫৫ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ, ঘোড়াশাল ৪১৬ মেগাওয়াট সিসিপিপি (ইউনিট-৩ রিপাওয়ারিং ও জিটি ইউনিট), ভোলা ২২০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (নতুন বিদ্যুৎ বাংলাদেশ), নারায়ণগঞ্জের কাঞ্চন ৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (কাঞ্চন পূর্বাচল পাওয়ার লি.) ও বড় দুর্গাপুর মোংলা বাগেরহাট ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র (এনারগন)।

২০২২ সালে ৫টি

ওই বছর চালু হওয়া যেসব কেন্দ্রের নথি চাওয়া হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে চাঁদপুর ১১৫ মেগাওয়াট (ডুরিন পাওয়ার), ঠাকুরগাঁও ১১৫ মেগাওয়াট (এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন), আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (পূর্ব-জিটি ইউনিট), লালমনিরহাট সৌর পার্ক (ইন্ট্রাকো সোলার লি.), আশুগঞ্জ ৪০০ মেগাওয়াট সিসিপিপি (পূর্ব) (এসটি ইউনিট) ও মৈত্রী সুপার থার্মাল ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (প্রথম ইউনিট)।

২০২৩ সালে ৬টি

এই বছর দেওয়া কেন্দ্রগুলো হচ্ছে বরিশাল ৩০৭ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক, গাইবান্ধা ২০০ সৌর পার্ক (তিস্তা সোলার), খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল, হাতিয়া ১৫ মেগাওয়াট (দেশ এনার্জি ও অফ গ্রিড), মিরসরাই ১৫০ মেগাওয়াট, খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল (এসটি ইউনিট), চট্টগ্রাম ২ ইনটু ৬১২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক প্রকল্প (দ্বিতীয় ইউনিট-এসএস পাওয়ার ১), চট্টগ্রাম ২ ইনটু ৬১২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক প্রকল্প (প্রথম ইউনিট-এসএস পাওয়ার ১) ও মাতারবাড়ী ১২০০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (প্রথম ইউনিট)

২০২৪ সালে ৩টি

২০২৪ সালে অনুমোদন দেওয়া যেসব কেন্দ্রের নথি তলব করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে ইউনিক-মেঘনাঘাট ৫৮৪ মেগাওয়াট সিসিপিপি (ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার), কক্সবাজার ৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র (ইউএস-ডিকে গ্রিন এনার্জি বিডি) ও মৈত্রী সুপার থার্মাল ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক (২য় ইউনিট)।