ঠিকানা বদল
স্মার্ট আইডি নিচ্ছে না লালমাইয়ের ১৩ হাজার ভোটার

প্রায় ১৩ হাজার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র পড়ে আছে কুমিল্লা আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে। যাদের নামে এই কার্ডগুলো ইস্যু করা হয়েছে তাদের ঠিকানা বদলের কারণে এখন আর তারা সেগুলো নিতে চাচ্ছে না। কুমিল্লায় নতুন সৃষ্ট উপজেলার (লালমাই) কারণে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এই পরিস্থিতির সম্মুখীন। এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ২০১৯ থেকে সাল থেকে, ২০২৫ সালে এসেও সেই সমস্যার জট এখনো খোলেনি। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ এপ্রিলে অনুষ্ঠিত মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। কুমিল্লা নির্বাচন অফিস ও আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের চিঠি চালাচালির মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ রয়েছে। জানা গেছে, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্রগুলো মুদ্রণের পর কয়েকটি এলাকা নিয়ে নতুন লালমাই উপজেলা গঠিত হয়। ফলে, কার্ডগুলোতে আগের উপজেলার নাম থেকে যায়। আর এই ঠিকানা ভুলের অজুহাতে স্থানীয়রা স্মার্টকার্ড নিতে চাইছেন না।
আরও জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল ইসির সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশনে মাসিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার কার্যবিবরণীর ১০.৫ অনুচ্ছেদে লালমাইয়ের স্মার্ট আইডি ইস্যুটি স্থান পায়। সেখানে বলা হয়, কুমিল্লা জেলার লালমাই উপজেলার প্রায় ১৩ হাজার স্মার্ট কার্ডের ঠিকানা অংশে সদর দক্ষিণ উপজেলার নাম থাকায় সেগুলো বিতরণ করা সম্ভব হয়নি।
এর আগে, ২০২২ সালের ২৯ মে’র লালমাই উপজেলাটি কুমিল্লা জেলার নবসৃষ্ট (২০১৮ সালে সৃজিত) একটি উপজেলা। নবগঠিত এই উপজেলার মোট নয়টি ইউনিয়ন পার্শ্ববর্তী উপজেলা কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থেকে এবং একটি ইউনিয়ন লাকসাম থেকে সংযুক্ত হয়েছে। লালমাই উপজেলার সৃজিত হওয়ার আগের ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেইজে শুধুমাত্র ভোটার এলাকা অংশের ঠিকানা (উপজেলা) লালমাই হয়েছে। কিন্তু বাকি ঠিকানা অপরিবর্তিত রয়েছে অর্থাৎ লালমাইয়ের জায়গায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ এবং লাকসাম উল্লেখ আছে। লালমাই উপজেলা গঠিত হওয়ায় যে সকল ভোটারের বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা লালমাই সে সকল ভোটারের জাতীয় পরিচয়পত্রের ডাটাবেইজে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা লালমাই হওয়ার কথা।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থেকে প্রাপ্ত ১২ হাজার ৮৮২টি স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র গত ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি সদর দক্ষিণ থেকে লালমাই উপজেলা নির্বাচন অফিসে যায়। কার্ডগুলো লালমাইয়ে পাঠানো হলেও সেগুলোর ঠিকানার উপজেলা অংশে লালমাইয়ের স্থলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থাকায় তা বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের সময় লালমাই উপজেলার শুধুমাত্র ১২ হাজার ৮৮২টি কার্ড এসেছে এবং অন্য কার্ডগুলো ওই নির্বাচন অফিসে সংরক্ষিত রয়েছে।
এ বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘কুমিল্লা সিটির অংশ সদর দক্ষিণের কয়েকটি ওয়ার্ড এবং লাকসাম উপজেলার একটি ইউনিয়ন নিয়ে লালমাই নামে নতুন একটি উপজেলা গঠিত হয়। নবসৃষ্টি উপজেলার কারণে মুদ্রিত প্রায় ১৩ হাজার স্মার্টকার্ড বিতরণ কার্যক্রম ঝুলে ছিল। আমরা বর্তমানে সেগুলো তাদের মধ্যেই বিতরণের নির্দেশ দিয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঠিকানা বদলের কারণে তারা এই কার্ডটি নিতে চাচ্ছে না।’ এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যদি কেউ গ্রহণ করতে না চায়, সেটি ওনার বিষয়। স্মার্টকার্ডগুলো অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে থাকতে পারে না। কেউ প্রয়োজন মনে করলে ফি জমা দিয়ে নতুন স্মার্টকার্ড নিতে পারেন।’