অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে, মায়ের নাকে খত: সেই বিএনপি নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি

ফেনীর সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নে ছেলের বিরুদ্ধে হাঁস ও কবুতর চুরির অভিযোগ তুলে দুই নারীকে নাকে খত দেওয়ানোর ঘটনায় সালিস বৈঠকের প্রধান দেলোয়ার হোসেন দেলুকে দল থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিএনপি। তিনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
গতকাল রোববার রাতে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলাল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নারী অবমাননার ঘটনা তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে বিএনপির সব দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সন্ধ্যায় সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বকুল ও সদস্যসচিব আমান উদ্দিন কায়সার স্বাক্ষরিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতে দেলোয়ারের সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়।
জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন বলেন, ‘মানবাধিকারের লঙ্ঘনের কোনো ঘটনার দায় দল নিতে পারে না। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে তাঁর সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই।’
ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। ১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে দেখা যায়, মাথিয়ারা গ্রামের সালিস বৈঠকে দুই নারীকে জনসমক্ষে জেরা করা হচ্ছে। তাঁদের ছেলেদের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ তুলে লাঠি হাতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দেলু অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। তাঁদের নাকে খত দিতে বাধ্য করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মধ্যম মাথিয়ারা গ্রামের জাহাঙ্গীর সরকারের বাড়িতে কয়েক মাস ধরে হাঁস ও কবুতর চুরির ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি ফের চুরির অভিযোগ উঠলে বৃহস্পতিবার (১ মে) রাতে স্থানীয় খালুর দোকানের সামনে সালিস বসে। সেখানে সন্দেহভাজন দুই যুবকের উপস্থিতিতে তাঁদের মায়েদের অপমানজনক আচরণের শিকার হতে হয়। একজনের গলায় ‘আমি চোর’ লেখা প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয় এবং পরে তাঁর মাকে নাকে খত দিতে বাধ্য করা হয়। অপর সন্দেহভাজনের মায়ের সঙ্গেও একই আচরণ করা হয়।