"উইমেন্স মুভমেন্ট নেভিগেটিং চেঞ্জ ইন সাউথ এশিয়াঃ বিল্ডিং সলিডারিটি অ্যান্ড রেজিস্টিং ব্যাকল্যাশ" শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) এবং সাসটেইনিং পাওয়ারঃ উইমেন্স স্ট্রাগলস এগেইনস্ট কনটেম্পোরারি ব্যাকল্যাশ ইন সাউথ এশিয়া (SuPWR)-র যৌথ আয়োজনে ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ঢাকার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে "উইমেন্স মুভমেন্ট নেভিগেটিং চেঞ্জ ইন সাউথ এশিয়াঃ বিল্ডিং সলিডারিটি অ্যান্ড রেজিস্টিং ব্যাকল্যাশ" শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অর্থনৈতিক ধাক্কা কীভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় নারী অধিকার ও নারী-পুরুষ সমতার বিভিন্ন বিষয়কে প্রভাবিত করেছে তা নিয়ে এ সম্মেলনে বক্তারা আলোচনা করেন।
বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল কিংবা, পাকিস্তান- প্রতিটি দেশেরই রয়েছে অর্থনৈতিক বা, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের অভিজ্ঞতা। এই পরিবর্তনের ফলে দক্ষিন এশিয়ায় নারী-পুরুষের সমতা ও নারী ক্ষমতায়নের ব্যাপারে একধরণের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। সম্মেলনে আগত অতিথিদের বক্তব্যে এ বিষয়টি উঠে এসেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা শিরিন পারভীন হক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, নারী অধিকার আন্দোলনের বিরোধিতার পেছনের কারণগুলি বোঝা খুব জরুরি। তিনি জুলাই-আন্দোলনে নারীদের অবদানের প্রশংসাও করেন। তিনি বলেন, “হাজার হাজার মেয়ে ও নারীরা নেতিবাচক কোনকিছুর ঘটার ভয় না পেয়ে জুলাই-আন্দোলনে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিল। এটা আমার প্রজন্মের নারীদের জন্য দারুণ অনুপ্রেরণাদায়ক। আমাদের সময়ে যখন নারী কর্মীরা দৃঢ়তার সাথে কাজ করার চেষ্টা করত, তখন তারা প্রায়ই বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হত। ফলে তারা পিছপা হতো বা, সেজন্য তাদের মাশুল দিতে হত।
প্রগতিশীলতা সকলের জন্য সমানভাবে কাজ করছে কি না- এ ব্যাপারে বিআইজিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন তাঁর উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, "নারী অধিকারের মতো বিষয়গুলোতে সামনের দিনে আরও ভালোভাবে কাজ করার জন্য আমাদের মাঝে সমালোচনামূলক চিন্তা-ভাবনার চর্চা করতে হবে এবং সেটি খুবই জরুরি।"
সম্মেলনে অংশ নেওয়া বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে সামাজিক পরিবর্তনে সক্রিয় ভূমিকা রাখার জন্য সামাজিক আন্দোলনে অংশগ্রহণের ওপরও জোর দেন। বিআইজিডি’র সিনিয়র ফেলো অব প্র্যাকটিস ও জেন্ডার অ্যান্ড সোশ্যাল মুভমেন্টস ক্লাস্টারের প্রধান মাহীন সুলতান বলেন, “আমরা শুধু সামাজিক আন্দোলন সম্পর্কে গবেষণা করতে চাই না, বরং সক্রিয়ভাবে সামাজিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখতে চাই।”
দিনব্যাপী এই সম্মেলনে গবেষক, শিক্ষাবিদ এবং প্র্যাকটিশনাররা একত্রিত হন ও জেন্ডার জাস্টিস সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন তথ্যাদি বিনিময় করেন। SuPWR হল পাঁচ বছরব্যাপী, বহু-দেশীয় একটি তুলনামূলক গবেষণা প্রকল্প। নারীবাদী আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া মোকাবিলায় কোন কোন কৌশলগুলি কাজ করেছে, তা বুঝতে এ প্রকল্পে দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশের ১৬টি নারীবাদী আন্দোলন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটিতে অর্থায়ন করেছে অর্থনৈতিক ও সামাজিক গবেষণা কাউন্সিল (ESRC)। ইনস্টিটিউট অফ ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (IDS) এ প্রকল্প সমন্বয় করছে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় এর চারটি অংশীদার রয়েছে। অংশীদারগুলো হল, বাংলাদেশে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট (বিআইজিডি); ভারতে আইএসএসটি; পাকিস্তানে আইডিয়াস ও এলইউএমএস এবং নেপালে কেয়ার।
সম্মেলনের পাশাপাশি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে লৈঙ্গিক ন্যায়বিচার বিষয়ক সংগ্রামের শিল্পকর্ম, ছবি ও অডিও-ভিজ্যুয়াল আউটপুট নিয়ে একটি প্রদর্শনী চলছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের শিল্পকর্ম ও ছবি নিয়েই সাজানো হয়েছে এ প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি ৮ ও ৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এবং এটি সবার জন্য উন্মুক্ত।