চোখের সামনেই মারা গেল কাছের বন্ধু: শিক্ষার্থীর বর্ণনায় বিমান দুর্ঘটনা

আগুন ধরা যুদ্ধবিমান আমার চোখের সামনেই স্কুলের ভবনে আঘাত করছে, ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারহান হাসান।
গতকাল সোমবার (২২ জুলাই) বেলা ১টায় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। এমন সময় হঠাৎ করেই বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি তাদের সামনে আছড়ে পড়ে।আমার চোখের সামনে জ্বলন্ত বিমানটি এসে পড়ল।
বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ফুটেজে দেখা যায়, বিমানটি একটি দোতলা ভবনের ওপর আছড়ে পড়ার পর সেখানে বিশাল অগ্নিকাণ্ড ও ঘন ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ১৭০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এফ-৭ বিজিআই মডেলের বিমানটি দুপুর ১টার কিছুক্ষণ পর প্রশিক্ষণ উড্ডয়নের সময় যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার হয়। নিহতদের মধ্যে বিমানটির চালক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামও রয়েছেন।
ফারহান বলেন, আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু, যার সঙ্গে আমি পরীক্ষা কেন্দ্রে ছিলাম, সে আমার চোখের সামনে মারা গেল। তিনি বলে, আমার চোখের সামনে...বিমানটি ঠিক তার মাথার ওপর দিয়ে গেল। অনেক অভিভাবক ভেতরে দাঁড়িয়ে ছিলেন, কারণ ছোট বাচ্চারা স্কুল ছুটির পর বের হচ্ছিল...বিমানটি অভিভাবকদের অনেককেও সঙ্গে নিয়ে (মারা যাওয়া অর্থে) গেছে।
কলেজের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বলেন, তিনি বিমানটিকে সরাসরি ভবনের ওপর আঘাত করতে দেখেছেন। আরেক শিক্ষক মাসুদ তারেক রয়টার্সকে বলেন, তিনি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তিনি বলেন, যখন আমি পেছনে তাকিয়েছিলাম, তখন শুধু আগুন আর ধোঁয়া দেখেছিলাম...এখানে অনেক অভিভাবক ও বাচ্চা ছিল।
জনবহুল আবাসিক এলাকায় দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরই বহু মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় করে। উৎসুক জনতা আশপাশের ভবনের ছাদে উঠেও দুর্ঘটনার দৃশ্য দেখার চেষ্টা করে। চারদিকে ছোটাছুটির মধ্যে অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবকেরা আহত এবং নিহতদের উদ্ধারের চেষ্টা চালান। অন্তত ৩০টি অ্যাম্বুলেন্সকে হতাহতদের সরিয়ে নিতে দেখা যায়।
ঘটনাস্থলে আসা এক নারী বিবিসিকে জানান, তার ছেলে দুর্ঘটনার পরপরই তাকে ফোন করেছিলেন, কিন্তু এরপর থেকে তিনি আর তার কোনো খবর পাননি।