ভাষার মাসে বাংলা নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিমত

পৃথিবীতে ভাষাভাষী জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলা পঞ্চম বৃহত্তম মাতৃভাষা। বাংলা ভাষায় কথা বলে এমন লোকের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে । পৃথিবীর পনেরো শতাংশ মানুষের মুখের শ্রুতিমধুর ভাষা বাংলাকে বিশ্বে আরো মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করতে হলে আমাদের করণীয় কি সেই বিষয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চার জন শিক্ষার্থীর মতামত তুলে ধরেছেন- সিফাত রাব্বানী।
বাংলা ভাষার ডিজিটাল ব্যবহারে স্বাধীনতা প্রয়োজন
মো: সাকিব হাসান
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলা ভাষার ডিজিটাল যাত্রায় বিজয় কি-বোর্ড একসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৮৮ সালে আবিষ্কৃত এই টাইপিং পদ্ধতি তখনকার সময়ে বাংলা লেখাকে প্রযুক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করার একটি বড় অগ্রগতি ছিল। তবে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে অন্যান্য আধুনিক ও সহজলভ্য বাংলা টাইপিং পদ্ধতি আসলেও, বিজয় কি-বোর্ড এখনো একচেটিয়া অবস্থান বজায় রেখেছে, বিশেষ করে সরকারি প্রতিষ্ঠানে। এই একক আধিপত্য প্রযুক্তির বহুমুখী বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে এবং বাংলা টাইপিং ব্যবস্থাকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে।প্রথমত, বিজয় কি-বোর্ডের লেআউট বেশ জটিল, যা নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য শেখা কঠিন। এটি ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়, যা সবার পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে, ইউনিকোড-সমর্থিত বিভিন্ন সফটওয়্যার, যেমন অভ্র, সহজেই শেখা যায় এবং ব্যবহারকারীদের জন্য বেশি সুবিধাজনক।দ্বিতীয়ত, বিগত সরকার বিজয় লে-আউটকে জাতীয় লে-আউট ঘোষণা দিয়ে নতুন মোবাইলে বিজয় ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়ায় প্রযুক্তিগত স্বাধীনতা ব্যাহত হচ্ছে। সরকারি দফতর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিকল্প সফটওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ সীমিত হওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে বিজয় ব্যবহার করে থাকেন, যদিও সহজতর ও আধুনিক বিকল্প রয়েছে।বাংলা ভাষায় টাইপিং ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও ব্যবহারকারী-বান্ধব করতে হলে প্রযুক্তিগত বিকল্পের সুযোগ উন্মুক্ত করা জরুরি। প্রতিটি ব্যবহারকারী যেন নিজের প্রয়োজন ও সুবিধামতো টাইপিং সফটওয়্যার বেছে নিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করা উচিত। বাংলা ভাষার ডিজিটাল অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল করতে প্রযুক্তিগত বৈচিত্র্য ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
বাংলা ভাষায় গবেষণাপত্র বেশি প্রকাশ করতে হবে।
সারা বিনতে আলম
শিক্ষার্থী, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
২১শে ফেব্রুয়ারি আমাদের ভাষার জন্য আত্মত্যাগের এক মহিমান্বিত দিন। এটি শুধু শহীদদের স্মরণের জন্য নয়, বরং বাংলা ভাষার উন্নয়ন, প্রসার ও গবেষণায় গুরুত্ব দেওয়ার প্রতিজ্ঞারও দিন। বর্তমান সময়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় বাংলা ভাষার ব্যবহার সীমিত হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ গবেষণা প্রবন্ধ ইংরেজিতে প্রকাশিত হয়, যা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য প্রয়োজনীয় হলেও দেশীয় পাঠকদের জন্য বোঝা কঠিন। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণ শিক্ষার্থীদের বোধগম্যতা ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে। উন্নত দেশগুলোতে উচ্চশিক্ষায় মাতৃভাষার ব্যবহার থাকলেও বাংলাদেশে ইংরেজির আধিপত্য দেখা যায়, যা শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রভাবকে সীমিত করছে। বাংলা ভাষায় গবেষণা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হলে বাংলা ভাষায় গবেষণা জার্নাল বৃদ্ধি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত গবেষণার বাংলা প্রচার, এবং বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বাংলা গবেষণা প্রবন্ধ জমাদানের সুযোগ তৈরি করা প্রয়োজন। এতে শিক্ষার্থী ও গবেষকরা সহজেই গবেষণার ফলাফল বুঝতে পারবেন। অতএব, উচ্চশিক্ষায় বাংলা ভাষার গুরুত্ব বাড়াতে হবে এবং একাডেমিক গবেষণার ভাষা হিসেবে বাংলা সমৃদ্ধ করতে হবে। কারন মাতৃভাষায় গবেষণা করলে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও উদ্ভাবনী চিন্তাধারা আরও সহজ হবে। ২১শে ফেব্রুয়ারির শিক্ষাই হলো—বাংলা ভাষাকে শুধু ভালোবাসা নয়, গবেষণা ও জ্ঞানের ভাষা হিসেবেও সমৃদ্ধ করা।
বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষার প্রসারে ভিন্ন কোনো পদক্ষেপ নেক।
ফারিহা হোসেন প্রভা
শিক্ষার্থী, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়
বাংলা একাডেমি বাংলা ভাষার সংরক্ষণ ও বিকাশে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণ করে প্রতিষ্ঠানটি বাংলা অভিধান প্রকাশ, গবেষণা পরিচালনা, ভাষাশিক্ষা কোর্স পরিচালনা এবং বইমেলার আয়োজন করে আসছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একাডেমি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও বাংলা ভাষার উন্নয়নে কাজ করছে। বাংলা লেখা সহজ করতে বিজয়, অভ্র ও রিদ্মিকের মতো সফটওয়্যার জনপ্রিয় হলেও এখনো উন্নত বাংলা ভাষার পরিশোধন বা ব্যাকরণগত সংশোধনের জন্য কার্যকর সফটওয়্যার নেই। একই সঙ্গে মানসম্পন্ন বাংলা প্যারাফ্রেজার ও কনটেন্ট উন্নয়ন টুলেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বাংলা ভাষার আরও প্রসার ও উন্নয়নের জন্য একাডেমির উচিত প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, নতুন ভাষাগত নিয়ম সংযোজন এবং সহজলভ্য ডিজিটাল বাংলা প্রসারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া। পাশাপাশি, শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত বাংলা শিক্ষা উপকরণ ও অনলাইন কোর্স চালু করা জরুরি, যাতে নতুন প্রজন্ম শুদ্ধ ও সমৃদ্ধ বাংলার চর্চা করতে পারে।
উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ভাষাকে উপেক্ষা করা যাবে না
তাসনিমুন ফারিহা
শিক্ষার্থী, ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় বরিশাল
অমর একুশ শুধু মাতৃভাষা দিবস নয় বাঙালির আত্মত্যাগ,সাহসের প্রতীক, মুক্ত ভাবে মনের কথা বলার জন্য বাঙালিদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই ভাষার একুশ নিয়ে যত ভাবনা,চারদিকে সারা জাগে,প্রশ্ন জাগে, আচ্ছা! মাতৃভাষা কি আগের মত আছে? হতাশ লাগে,বাংলার জায়গা দখল করছে ‘বাংলিশ’, বিশুদ্ধ বাংলা চর্চা কমে যাচ্ছে, সাহিত্যের কদরও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে ভাষা ব্যবহার বদলে যাচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে এই পরিবর্তন অনেকটা দ্রুত। আমরা কি এখনও সেই সঠিক ভাষায়, সেই দেশপ্রেমে কথা বলি, যা একুশের সেই চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? ডিজিটাল যুগের উন্নতির সাথে সাথে সামাজিক মাধ্যমেও বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। উউচ্চশিক্ষায় মাতৃভাষায় লেখার স্বাধীনতা থাকলেও ইংরেজি দূর্বল এমন শিক্ষার্থীদের শিক্ষকরা নাম্বার কম দিয়ে আসছেন কিংবা আর চোখে দেখছেন। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যদি বাংলা কোর্সগুলো আরও গুরুত্ব পায়, তবে নতুন প্রজন্ম বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী হবে। এতে শুধু ভাষা নয়, সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা, দেশপ্রেম এবং সাংস্কৃতিক সচেতনতা বাড়বে। কিন্তু এসব নিয়ে দায়িত্বের কথা স্মরণ করা হয়, কিন্তু বাস্তবতায় তা তেমন কার্যকরী হয় না।বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা কোর্স চালুর আহ্বান ওঠে, কিন্তু সময় গড়িয়ে গেলে এসবের গুরুত্ব কমে যায়। একটা গুরুত্বপূর্ণ দাবি শুধুমাত্র দিবস ভিত্তিক আলোচনা না হয়ে, সারাবছর ব্যাপী আলোচনায় পরিণত হওয়া উচিত। বাংলা ভাষা আমাদের আত্মপরিচয়ের পরিচায়ক, আমাদের ইতিহাস এবং সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি জনগণেরও দায়িত্ব রয়েছে বাংলাকে প্রাধান্য দেয়ার। আশা রাখি বাংলা ভাষার সঠিক চর্চা ও বিকাশ হোক,একুশের চেতনা বারবার ফিরে আসুক।
ভাষা নিয়ে কাজ করেন এমন সবার স্বীকৃতি চাই
মো: জাহিনুল ইসলাম রাজিন
শিক্ষার্থী, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
বাংলা ভাষার গৌরব, তার সমৃদ্ধ ইতিহাস ও সংস্কৃতির জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। এর মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের জাতীয় পরিচয় খুঁজে পাই এবং এই ভাষার প্রায়শক্তি অসাধারণভাবে ফুটে ওঠে। বাংলা ভাষার গৌরবময় অভিযাত্রার এক নবযুগের সূচনা ঘটিয়েছেন মেহেদী হাসান খান, তাঁর অসাধারণ সৃষ্টির মাধ্যমে। অভ্র নামক এই কীবোর্ড কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় বিপ্লব এসেছে। এই অসামান্য সৃষ্টির জন্য সম্প্রতি মেহেদী হাসান খান ও তার দলের সদস্যরা একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন এবং গ্রহণ ও করলেন। অভ্র কীবোর্ড আজ বহু বাঙালিকে দ্রুত ও সুন্দরভাবে মাতৃভাষায় যোগাযোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে, যা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সাফল্যকে স্বগৌরবে স্মরণ করিয়ে দেয়। তবে, এই অভিযাত্রার মুকুটে রয়েছে আরও অসংখ্য নিরলস কর্মী, যারা বাংলা ভাষার উন্নতিতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। বাংলা টাইপফেস ডিজাইন করছেন, ফন্ট বানাচ্ছেন তাদেরও স্বীকৃতি প্রয়োজন, সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মত স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান, যার উদ্দেশ্য মাতৃভাষার চর্চা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও সুরক্ষা প্রদান। এছাড়াও, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের গবেষক, যারা বাংলা ভাষাকে নতুন মাত্রায় নেওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করছেন সারাক্ষন। এমন প্রত্যেক বীরকে সমানভাবে মর্যাদা প্রদান করা উচিত, যাতে তাঁদের প্রয়াস যথোপযুক্ত স্বীকৃতি পায় এবং তাঁরা আরও উৎসাহিত হয়ে ভাষার উন্নয়নে লিপ্ত থাকতে পারেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রাণপ্রিয় বাংলা ভাষার সেবকদের সম্মানিত করা মানে ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের সম্মানিত করা। আমাদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এবং ভাষা শহীদদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, আমরা আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষার উন্নয়নে সচেষ্ট থাকি। মাতৃভাষার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জ্ঞাপন করে, আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকি এবং আমাদের ভাষার গৌরবকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিই।
মারমা সহ অন্যান্য ভাষায় লেখার সফটওয়্যার চাই
মংহাই নু মারমা
শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
৫২'র আদর্শ ধারণ করে বিশ্বের আজ নতুন পরিচয় হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাঙালি মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান পাশাপাশি ৫০টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রয়েছে। তাদের মধ্যেই নিজস্ব ভাষার সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য আছে। মারমা বাংলাদেশের আদিবাসী মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। আমাদের নিজস্ব মাতৃভাষা ভাষা আছে। কিন্তু লেখার সফটওয়্যার না থাকায় আমাদের মাতৃভাষা হারিয়ে যেতে বসেছে আজ। সফটওয়্যার ব্যবহার করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ডিজিটালাইজড ভাষাগত ডাটাবেস তৈরি করে মারমা ভাষা সংরক্ষণ করতে হবে। বতর্মান সময়ে ভাষা সংরক্ষণের জন্য সফটওয়্যার খুবই প্রয়োজন। কেননা সফটওয়্যার মাধ্যমে অক্ষর লিপিবদ্ধ করতে পারি। যদি লিপিবদ্ধ না থাকে তাহলে আস্তে আস্তে করে ভাষায়গুলো হারিয়ে যাবে এবং ভাষায় হারিয়ে গেলে আমাদের জাতির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। একটা জাতির টিকে থাকে তাদের ভাষা এবং সংস্কৃতি মধ্যেই দিয়ে। যে জাতির ভাষা লিপিবদ্ধ এবং সংরক্ষণ থাকবে না সেই জাতির বিলুপ্ত অনিবার্য। সরকারিভাবে আমাদের মাতৃভাষা সহ অন্যান্য সকল জাতিগোষ্ঠী ভাষায় সফটওয়্যার তৈরি মাধ্যমে সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি আর্শীবাদ হয়ে থাকবে। পরিশেষে বলতে চাই- ဘာသာစကားလွတ်လပ်ခွင့်သည်လူတိုင်းအတွက်ဖြစ်သည်။ ဘာသာစကားသည်ပွင့်လင်းလာသည်။