ঢাকা বুধবার, ২০শে আগস্ট ২০২৫, ৬ই ভাদ্র ১৪৩২


৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি: ফাঁকাই থেকে যাবে সাড়ে ৫৮ হাজার পদ


প্রকাশিত:
২০ আগস্ট ২০২৫ ১৪:৫৪

দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ৪১ হাজার ৬২৭ জন প্রার্থীকে সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানে মোট শূন্য পদ রয়েছে ১ লাখ ৪২টি। ফলে সুপারিশপ্রাপ্তদের নিয়োগের পরও ৫৮ হাজার ৪১৫টি পদ ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে।

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এই নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা করছে। শিক্ষাখাতে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে দীর্ঘদিন ধরেই পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়ে আসছিলেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও এবারের নিয়োগ সুপারিশ শিক্ষাখাতে নতুন গতি আনবে বলে মনে করছেন অনেকে, তবে বিশাল সংখ্যক শূন্য পদ থেকে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদরা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘাটতির প্রভাব পড়বে শিক্ষার মানে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই একাধিক বিষয়ের জন্য শিক্ষক না থাকায় পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তাদের মতে, দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা নিয়ে পর্যায়ক্রমে বাকি শূন্য পদগুলো পূরণ করা না হলে শিক্ষার গুণগত মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে।

গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে ৬ষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল হস্তান্তর করেন এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, আবেদন গ্রহণকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের আবেদন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে প্রেরিত শূন্যপদ বাতিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে মোট ৭৮০টি পদের চাহিদা বাতিল করা হয়। ৭৮০টি চাহিদা বাতিলের পর অবশিষ্ট ১,০০,০৪২টি পদের বিপরীতে নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রার্থীদের মেধাক্রম ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রদত্ত গাইডলাইন অনুসরণ করেটেলিটক বাংলাদেশ লিঃ কর্তৃক সফটওয়ারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৪১৬২৭ জন প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ করা হয়।

এতে আরও বলা হয়, ১২৫ জন প্রার্থী তাদের নিবন্ধন সনদে উল্লিখিত পদ বিষয় ও প্রতিষ্ঠান ধরণ বহির্ভূত পদে আবেদন করায় নীতিমালা অনুযায়ী তাদের ফলাফলের জন্য বিবেচনা করা যায়নি।

গত ১৬ জুন ১,০০,৮২২ টি শূন্যপদের চাহিদা পূরণের জন্য ৬ষ্ঠ নিয়োগ সুপারিশ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির আওতায় নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিকট থেকে ২২জুন থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত অনলাইনে ৫৭,৮৪০ টি আবেদন পাওয়াযায়। এর মধ্যে পুরুষ আবেদনকারীর সংখ্যা ৩৩,৮০৪ জন এবং মহিলা আবেদনকারীর সংখ্যা ২৪,০৩৬ জন।

আবেদন গ্রহণকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের আবেদন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে প্রেরিত শূন্যপদ বাতিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে মোট ৭৮০টি পদের চাহিদা বাতিল করা হয়। ৭৮০টি চাহিদা বাতিলের পর অবশিষ্ট ১,০০,০৪২টি পদের বিপরীতে নিবন্ধনধারী প্রার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রার্থীদের মেধাক্রম ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রদত্ত গাইডলাইন অনুসরণ করেটেলিটক বাংলাদেশ লিঃ কর্তৃক সফটওয়ারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৪১৬২৭ জন প্রার্থীকে নিয়োগ সুপারিশ করা হয়।

শিক্ষক নিবন্ধন লিখিত পরীক্ষার ঐচ্ছিক বিষয়ের প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারিত হয়ে থাকে। প্রার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বরধারী প্রার্থীকে কম্পিউটার সফটওয়ারের মাধ্যমে নির্বাচন করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১০ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখের স্মারক নং ৩৭,০০,০০০০.০৭১.০৮.০০৮.০৫(অংশ)-৩৩ এর নির্দেশনা অনুযায়ী একই বিষয়ে একই নম্বরপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মেধাক্রম নির্ধারণে জটিলতা নিরসনকল্পে প্রথমে প্রার্থীর বয়স, অতঃপর এসএসসি/ সমমান পরীক্ষার ফলাফল এবং সর্বশেষ সংশ্লিষ্ট পদের জন্য প্রযোজ্য সর্বোচ্চ ডিগ্রীর ফলাফল বিবেচনা করা
হয়।

১২৫ জন প্রার্থী তাদের নিবন্ধন সনদে উল্লিখিত পদ বিষয় ও প্রতিষ্ঠান ধরণ বহির্ভূত পদে আবেদন করায় নীতিমালা অনুযায়ী তাদের ফলাফলের জন্য বিবেচনা করা যায়নি।

উল্লেখ্য, এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী ১৮ তম নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ২০২৩ সালের ২ নভেম্বর। এতে আবেদন করেন ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭১৯ জন। প্রিলিমিনারী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০২৪ সালের ১৫ মার্চ। এতে অংশগ্রহণ করেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৩৩ জন। এ পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় গত বছরের ১৫ মে। এতে উত্তীর্ণ হন ৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন।

লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীর সংখ্যা ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৬৮০ জন। লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয় গত বছরের ১৪ অক্টোবর। এতে উত্তীর্ণ প্রার্থীর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন ৮১ হাজার ২০৯ জন। এতে উত্তীর্ণ হন ৬০ হাজার ৬৩৪ জন।