ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ
উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব পুতিনের

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। ইরানের ওপর ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইসরায়েলের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতারও প্রস্তাব দিয়েছেন।
ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার জানানো হয়েছে, পুতিন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের সঙ্গে পৃথক ফোনালাপ করেছেন।
ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পুতিন জোর দিয়ে বলেছেন যে রাশিয়া ইসরায়েলের পদক্ষেপের নিন্দা জানায়, যা জাতিসংঘ সনদ ও আইন লঙ্ঘন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জাতিসংঘের সদস্য একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, তার নাগরিকদের বিরুদ্ধে, ঘুমন্ত শান্তিপূর্ণ শহর এবং পারমাণবিক শক্তি অবকাঠামোর বিরুদ্ধে বিনা উসকানিতে ইসরায়েলের এই ধরনের আক্রমণ সামরিক হামলা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এই ধরনের আগ্রাসী কর্মকাণ্ডের দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। এটি শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলে এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা উভয়কেই দুর্বল করে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) বোর্ড অব গভর্নরস সেশনের মাঝামাঝি সময়ে এবং ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনার আরেকটি রাউন্ডের ঠিক আগে এই ইসরায়েলি হামলা, পরিস্থিতিকে বিশেষভাবে হতাশাজনক করে তুলেছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফোনালাপে পুতিন নেতানিয়াহুকে বলেছেন, তিনি উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি রোধে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত।
ক্রেমলিন বলেছে, রাশিয়া বর্তমান পরিস্থিতি সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি পুরো অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ পরিণতির ঝুঁকি তৈরি করেছে।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া তার নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। ইসরায়েলে অবস্থিত রাশিয়ার দূতাবাস রুশ নাগরিকদের ভ্রমণ এড়িয়ে চলার এবং যারা ইতিমধ্যে সেখানে আছেন, সম্ভব হলে তাঁদের দেশটি ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছে। ইরান ও মিশরে অবস্থিত রুশ কূটনৈতিক মিশনগুলোও ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে।
রাশিয়ার বৃহৎ বিমান সংস্থাগুলো, গত বৃহস্পতিবার থেকে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ফ্লাইট বাতিল এবং রুট পরিবর্তন করার ঘোষণা দিয়েছে। রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা রোসাভিয়াশিয়া পরবর্তীতে ২৬ জুন পর্যন্ত ইসরায়েল, ইরাক, ইরান এবং জর্ডানের আকাশসীমায় দেশের বিমান সংস্থাগুলোকে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।