বিয়ামে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশন। বিজয় দিবসের ৪৯তম বার্ষিকীর দিনে বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইস্কাটনে সংস্থার কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধন করেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ।
বিয়াম ফাউন্ডেশন ভবনের মূল ফটকের করিডোরে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নারে জাতির পিতার ২৭টি গ্রুপ ও একক ছবি স্থান পায়। এছাড়া সেখানে ছোট একটি লাইব্রেবিতে স্থান পায় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা কিছু বই।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হেলালুদ্দীন বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপনে বিয়াম ফাউন্ডেশনের প্রশংসা করেন। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধু কর্নার আগেই স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও করোনা সংক্রমণের কারণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আগামী বছর আমরা বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো। পালন করবো স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণজয়ন্তীও। পৃথিবীর সব দেশের স্বাধীনতা দিবস এবং বিজয় দিবস নেই। পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে দেশ পেয়েছে। তাদের স্বধীনতা দিবস নেই। দেশ পেতে কোনো রক্ত ঝরাতে হয়নি। কিন্তু আমরা একটি জনযুদ্ধের মাধ্যমে দেশটি পেয়েছি। ইউরোপ আমেরিকার বহু দেশই স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধ ছাড়া।’
সচিব বলেন, ‘আমরা প্রশাসনিক ক্যাডাররা একটা কঠোর বার্তা দিয়েছি। আমরা বোঝাতে সক্ষম হয়েছি শুধু রাজনৈতিক দলই নয় প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় মেনে নেবে না।
বিয়াম ফাউন্ডেশনের যেভাবে বঙ্গবন্ধু কর্নার করেছে সেভাবে সারাদেশের সবগুলো জেলায় যদি একটি করে স্কুলে বঙ্গবন্ধু কর্নার করে দিতে পারতো তাহলে বিয়াম ফাউন্ডেশন তাদের অবদানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারতো।’
হেলালুদ্দীন এ সময় কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর বিরুদ্ধে প্রজতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। এর প্রতিবাদ জানিয়ে প্রশাসন ক্যাডারের উদ্যোগে আয়োজিত সভার প্রসঙ্গও টানেন। তিনি বলেন, ‘প্রশাসন ক্যাডারের সুসমন্বয়ের মাধ্যমে তারা একটি সফল কর্মসূচি করতে পেরেছে। এতে অন্যান্য ক্যাডারের প্রতিনিধিরাও অংশ নিয়েছেন। রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গও তাকে টেলিফোন করে অনুষ্ঠানের প্রশংসা করেছেন।’
এ সময় তিনি বিয়াম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় একটি করে স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব করেন।
অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে যারা বিতর্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছে,তারা এবং তাদের উত্তরসূরিরা কখনও দেশের স্বাধীনতা চায়নি।’ এ সময় তিনি ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীর মূলোৎপাটনের কথাও বলেন। পরে হেলালুদ্দীন ফিতা কেটে বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলামসহ প্রশাসন ক্যাডারের সিনিয়র কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে গত বছর থেকেই বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম যাতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে পারে, সে জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।