ঢাকা রবিবার, ৪ঠা মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


রাস্তায় ভিকারুননিসার মেয়েরা, তোপের মুখে শিক্ষামন্ত্রী


৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:২১

আপডেট:
৪ মে ২০২৫ ০৮:২৪

বাবা-মা’কে অপমান করে শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের পদত্যাগের দাবিতে বেইলি রোডের সড়কে বসেছে শিক্ষার্থীরা। অরিত্রিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচার চেয়েছে তারা

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড নিয়ে তারা বিক্ষোভ করছে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত স্কুলের বাইরে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিক্ষোভ চলছিল।

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইশরাত সুবর্ণ বলে, আমরা ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। অধ্যক্ষের খামখেয়ালির কারণেই মরতে হয়েছে অরিত্রিকে, আমরা তার পদত্যাগ চাই।

আন্দোলনে অংশ নেয়া দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা জাহানারা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এটি একটি দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। স্কুল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষার্থী যদি নকল করে থাকে সেজন্য সে ক্ষমা চেয়েছে। পা ধরেও ক্ষমা চেয়েছে। তারা তাকে মাফ না বরং তার বাবা-মা’কে অপমান করেছে, তাকে টিসি (বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র) দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ সাধারণভাবে নিতে পারত, অরিত্রিকে বহিষ্কার কিংবা অন্য শাস্তি দিতে পারত। আমরা এটাকে হত্যা বলতে চাই। জড়িতদের বিচার চাই।’

তোপের মুখে শিক্ষামন্ত্রী

ভিকারুননিসা নূন স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার পর ওই স্কুলে গিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে গেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।স্কুলে যাওয়ার আগে মন্ত্রী  বলেছিলেন, শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে তিন সদস্যের একটা কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেছিলেন, ‘অভিভাবকরা মিছিল-টিছিল করছেন, বিষয়টা জটিল হয়ে গেল। আমি সেখানে যাচ্ছি। গতকাল শুনেই আমি যথাসম্ভব তথ্য নিয়েছি। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমি তাদের বলেছি, আপনারা আইনগত দিকটা দেখেন, কারণ এরমধ্যে ক্রিমিন্যাল ব্যাপার আছে একটা। আর আমরা আমাদের বিষয়টা দেখব।’

সোমবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি। মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অরিত্রির আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তারা বাবা দিলীপ অধিকারী বলেন, ‘অরিত্রির স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। রোববার (২ ডিসেম্বর) সমাজবিজ্ঞান পরীক্ষা চলার সময় তার কাছে একটি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের ডেকে পাঠায়। সোমবার স্কুলে গেলে স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানায়, অরিত্রি মোবাইল ফোনে নকল করছিল, তাই তাকে বহিষ্কারের (টিসি) সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ মেয়ের সামনে আমাকে অনেক অপমান করে। এই অপমান এবং পরীক্ষা আর দিতে না পারার মানসিক আঘাত সইতে না পেরে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। বাসায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় অরিত্রি।