ঢাকা শুক্রবার, ৯ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


২ কোটি টাকা চাঁদা না দেওয়ায়

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার স্বেচ্ছাচারিতা,চাঁদা না পেয়ে বাড়ি দখল


১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৪১

আপডেট:
১৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৪২


২ কোটি টাকা চাঁদা না দেওয়ায় রাজধানীর পশ্চিম কাফরুলে কয়েকজন ব্যবসায়ী ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার বাড়ি দখল করে মাদকের কারবার চালানোর অভিযোগ উঠেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ শেরেবাংলা নগর থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাশফিকুর রহমান উজ্জ্বল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, এ অভিযোগ এনে থানা ও আদালতে মামলা করার পাশাপাশি প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ

বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত আবেদনও করেছেন তারা। এছাড়া আধিপত্য বিস্তারের জন্য উজ্জ্বল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যা, নারী নির্যাতন, অস্ত্রের মহড়া, হামলা-ভাঙচুরসহ বহু অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কাফরুল থানার ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ২নং ইউনিটের সভাপতি মোয়াজ্জেম আলী একাধিক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, উজ্জ্বল ও তার ভাই মাসুদ ওরফে কালা মাসুদ এলাকায় মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদাবাজি করছে।

তারা পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে জামিল হত্যা মামলার আসামি। তারা বেশ কয়েক দফায় এলাকায় গোলাগুলি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে। মোছাম্মৎ নদী নামে এক নারী শেরেবাংলা নগর থানায় উজ্জ্বলকে প্রধান আসামি করে জুলহাস, হিরনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেছেন। উজ্জ্বলের নামে আরমিন নামে আরেক নারীও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।

মো. শাহজাহান নামে কাফরুল মোল্লাপাড়ার এক বাসিন্দা মামলা করেছেন অস্ত্রের মুখে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে। এভাবে উজ্জ্বল ও তার দলবলের বিরুদ্ধে কাফরুল ও শেরেবাংলা নগর থানায় প্রায় এক ডজন মামলার বিবরণ পাওয়া গেছে, যার নথিপত্র দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে।

পশ্চিম কাফরুলে মো. আবদুল হালিম আকন্দ প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর লিখিত অভিযোগে বলেছেন, তারা ৩২ জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ৪২ পশ্চিম কাফরুল মোল্লপাড়ায় টিনশেড বাড়িসহ প্রায় সাড়ে সাত কাঠা জমি কেনেন। উজ্জ্বল ও তার দলবল একটি ভুয়া বায়নাপত্র তৈরি করে বাড়িটি দখল করে। তাদের বায়নাপত্র ভুয়া হওয়ার বিষয়টি আদালতের নির্দেশে সিআইডির তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। পরে ৩২ জনের মামলায় উজ্জ্বল গ্রেপ্তার হয়। তারপরও উজ্জ্বল ও তার সহযোগী রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে তাদের লোকজনের ওপর হামলা ও দলিল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় জিডি করা হয়েছে।

আবদুল হালিম আকন্দ বলেন, ‘উজ্জ্বলের সহযোগী হিসেবে আনোয়ার হোসেন, দ্বীন ইসলাম, সজিবুল ইসলাম সজিব, সাইফুল ইসলাম মোল্লা, ফকরুল ইসলাম ওরফে সহিদ মিয়া, মামুনুর রশীদ, পিয়ার আহাম্মেদ, শহিদ মিয়া, এম আজিজুর রহমান ও রবিউল ইসলাম তাদের কেনা সম্পত্তি ভুয়া বায়নাপত্র করে দখল করেছে। উজ্জ্বল তার বাহিনী নিয়ে ক্রেতাদের কাছে ২ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেওয়ায় তারা বাড়িটি দখল করে নেয়। প্রতি মাসে সেখান থেকে তারা ৮৫ হাজার টাকা ভাড়া আদায় করছে। সেখানে মাদক কারবারও চালাচ্ছে।’

এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মাশফিকুর রহমান উজ্জ্বলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়েও তার সাড়া পাওয়া যায়নি। ক্ষুদেবার্তা পাঠানোর পর ফোন বন্ধ করে দেন তিনি।