ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৪শে বৈশাখ ১৪৩২


মাদারীপুরে ‘বিদআত’ উদ্বেগে কেটে ফেলা হলো ২০০ বছরের প্রাচীন বটগাছ


৬ মে ২০২৫ ১৬:৫৭

আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ১৬:৫৭

ভিডিও থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট

'বিদআত'সহ বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে মাদারীপুর সদর ইউনিয়নের শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরের কান্দি এলাকায় প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো একটি বটগাছ কেটে ফেলেছেন স্থানীয় আলেমরা।

গতকাল সোমবার (৫ মে) সকাল ৯টার দিকে তারা সেখানে গিয়ে গাছ কাটা শুরু করেন। এরপর একে একে ডালপালা থেকে শুরু করে মূল দণ্ডায়মান গাছটির প্রায় ৭৫ শতাংশ কেটে ফেলা হয়।

ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক স্থানীয় বাসিন্দা বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, কুমার নদীর পাড়ে অবস্থিত বটগাছটি 'অলৌকিক ক্ষমতার' অধিকারী বলে বিশ্বাস করে অনেকে। এ কারণে প্রাচীন এই বটগাছের গোড়ায় অনেকে মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করত বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।

শিরখাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত করেন, স্থানীয় আলেমরা বটগাছটি কেটে ফেলেছেন। 'তবে গাছটি কাদের নেতৃত্বে কাটা হয়েছে সে তথ্য আমি এখনও পাইনি,' বলেন তিনি।

আবুল কালাম আজাদ আরও বলেন, অনেক স্থানীয় বাসিন্দাই মনে করছেন গাছটি কাটা ঠিক হয়নি। তবে তারা ভয়ে কথা বলছেন না।

ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজম খান বলেন, 'ওই বটগাছটির নিচে কিছু লোক "আচার" পালন করত, যা আলেমরা আপত্তিকর মনে করেন। ইসলামে এ ধরনের বিধি-বিধান না থাকার কারণেই গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ কারণেই সবাই একত্রিত হয়ে বটগাছটি কাটা শুরু করেন। তারা কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।'

তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নের সব গ্রাম থেকেই ওই ঘটনাস্থলে লোক গেছে; তাদের মধ্যে তার এলাকার মানুষও ছিল। তার এলাকার কাদের ব্যাপারী, দাদন হুজুর, কাবিল বেপারী, ইব্রাহিম হুজুরসহ তাদের স্থানীয় মসজিদের ইমামও ছিলেন।

গাছ কাটা সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রী নদী গ্রামে বাসিন্দা মো. দাদন। এই যুবক বলেন, মানুষ ওই বটগাছের নিচে 'পূজা' করত বলে স্থানীয় আলেমরা সেটা মেনে নিতে পারেননি। এ কারণেই গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে। গাছটি কাটায় প্রায় ২০০ লোক অংশ নেয় বলে জানান তিনি।

মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, 'আমি এই বিষয়টি গতকাল রাতে জানতে পেরেছি। এ ঘটনার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে ডাকা হয়েছে। তাদের সাথে কথা বলে আমি পরবর্তীতে এ বিষয়টি আপনাদেরকে জানাতে পারব—যে কারণে বিষয়টি নিয়ে আমি এখন কথা বলতে চাচ্ছি না।'