ঢাকা বুধবার, ১৮ই জুন ২০২৫, ৫ই আষাঢ় ১৪৩২


বান্দরবান-সুয়ালক-লামা সড়কে যান চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে স্থানীয়রা


১ জুন ২০২৫ ১৪:১৮

আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ০৯:৩২

ছবি : সংগৃহীত

নিম্নচাপের প্রভাবে বান্দরবানে টানা বর্ষণে বিভিন্ন স্থানে সড়কে মাটি ধসে পড়েছে। এতে বান্দরবান-সুয়ালক-লামা বাইপাস সড়ক দিয়েও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বান্দরবান সদর উপজেলার টংকাবতী ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়া এলাকায় সড়কের তিনটি স্থানে বড় ধরনের ভাঙনের কারণে শুক্রবার থেকে সড়কটি সম্পূর্ণ অচল হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, দুই বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি কার্পেটিং করা হয়। এরপর থেকে আর কোনো সংস্কার হয়নি। ফলে প্রতি বর্ষায় পাহাড়ি ঢলে ভেঙে যাচ্ছে সড়কের বিভিন্ন অংশ। বর্তমানে সড়কটি যেন একটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ছোট-বড় যানবাহন চলাচল করছে। তবে এবার পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে, যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।

টংকাবতী ইউনিয়নের পুনর্বাসন ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা হেবল ত্রিপুরা বলেন, “দুই বছর আগে কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি পাকা করা হলেও বেহাল দশা কাটেনি। সংশ্লিষ্টদের জানিয়েও কোনো সমাধান মেলেনি।”

একই কথা জানান স্থানীয় বাসিন্দা তঙ্গয়ে ম্রো ও ট্রাক চালক জসিম। তারা বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কের মাটি ধসে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে অতি বৃষ্টির কারণে সড়কের দুপাশ ধসে পড়ায় শুক্রবার থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।

টংকাবতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মায়াং ম্রো প্রদীপ বলেন, “গত বছর থেকেই সড়কটি ধসে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এলজিইডিকে জানালেও কোনো কাজ হয়নি। এবার বর্ষার শুরুতেই যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।”

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ সরোয়ার হোসেন বলেন, “সুয়ালক-লামা সড়কের টংকাবতী ইউনিয়নের হেডম্যান পাড়ার সড়কের তিনটি জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলীকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বাজেট প্রনয়ন করার জন্য বলা হয়েছে। দুয়েক-দিনের মধ্যে জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হিসেবে প্রধান কার্যালয়ে বরাদ্দ চেয়ে দ্রুত বাজেট পাওয়ার আবেদন করা হবে। বড় ধরনের বরাদ্দ পেলে সড়কের দুই ধারে রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ করা হলে স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধ করা যাবে।"

কয়েক দিনের ভারি বর্ষণের কারণে যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় জেলার সাতটি উপজেলায় মোট ২২০টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের এসডিসি আসিফ রায়হান। বান্দরবান সদরে ৪৬টি, রুমা উপজেলায় ২৮টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৯টি, থানচি উপজেলায় ১৫টি, লামা উপজেলায় ৫৫টি, আলীকদম উপজেলায় ১৫টি এবং নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৪২টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

পাশাপাশি পাহাড়ে পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বান্দরবান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মণ্ডল বলেন, রোববার সকাল থেকে আবারও থেমে থেমে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে বকলে জানান তিনি।