নদ-নদীর পানি বাড়ছে, ভয়াবহ বন্যার শঙ্কায় সিলেট

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ সিলেটে বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আজ সোমবার (২ জুন) সিলেট বিভাগের অধিকাংশ নদ-নদীর পানি বন্যা বিপদসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে আসা পানির প্রবাহে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, বিশেষ করে সুরমা, কুশিয়ারা ও মনু নদীর পানি দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ভারতীয় রাজ্য আসামের পূর্বাঞ্চলের করিমগঞ্জ, কাছার ও হাইলাকান্দি জেলায় আজ সারাদিন ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এর প্রভাব সরাসরি পড়ছে সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার নদীগুলোতে। ফলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার সকাল ৯টায় পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার অমল-শহীদ স্টেশনে কুশিয়ারা নদীর পানি বন্যা বিপদসীমার ১৮৪ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত চলতি বন্যার সর্বোচ্চ রেকর্ড।
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার মনু স্টেশনে মনু নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার মারকুলি স্টেশনে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনগুলোকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে। নিচু এলাকা ও নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দারা ইতোমধ্যেই জলাবদ্ধতা ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, ভারতের উজানে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে এবং নদনদীতে পানির চাপ বাড়তে থাকলে আগামী ২৪ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
সরকারি পর্যবেক্ষণ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানানো হচ্ছে, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর জনগণকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করার।
এদিকে পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অনিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও সঠিক পানি ব্যবস্থাপনার অভাব এই ধরনের আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করে তুলছে।
সতর্কবার্তা:
সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের বাসিন্দাদের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে, তারা যেন স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করেন এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চল থেকে সাবধানতা অবলম্বন করে সরে যান।