ঢাকা বুধবার, ১৮ই জুন ২০২৫, ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২


জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে শ্রমিকদের বিক্ষোভ


১৪ জুন ২০২৫ ১৬:১২

আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ০৫:৪৪

সিলেটের জাফলংয়ে আজ শনিবার দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেন বালু-পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র জাফলংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টার গাড়িবহর আটকে বিক্ষোভ করেছেন বালু-পাথর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেরা। আজ শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা জাফলং পরিদর্শন শেষে স্থানীয় শ্রমিকদের রোষানলে পড়েন দুই উপদেষ্টা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জাফলং পরিদর্শন শেষে ফিরছিলেন। এ সময় শ্রমিকেরা তাঁদের গাড়িবহর ঘিরে ধরেন।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, জাফলংসহ সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা প্রক্রিয়া স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে স্থানীয়রা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেলা আড়াইটার দিকে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘রোষানলে বলা যাবে না। উপদেষ্টারা ফেরার পথে সড়কের দুপাশে দাঁড়িয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে নিজেদের দাবি জানিয়েছেন। এ সময় রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ দ্রুত তাঁদের সরিয়ে দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ উপদেষ্টারা নিরাপদে হরিপুর গেস্ট হাউসে পৌঁছেছেন।’

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সড়কের গাড়ি আটকে শ্রমিকেরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সড়কে আটকা পড়েন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। পরে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়ে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক করে।

জাফলং পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সিলেটের নান্দনিক ও নৈসর্গিক আবেদন আছে এ রকম জায়গায় আমরা আর পাথর উত্তোলনে অনুমতি দেব না। পরিবেশ ধ্বংস এবং লুটপাট বন্ধে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই জায়গা (জাফলং) প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা। এখানে পরিবেশবান্ধব পর্যটন বিকাশের মাধ্যমে যাঁরা পাথর উত্তোলন করেন, তাঁদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য আমরা পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি।’

উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘একাত্তর সালে আমার আব্বা এমসি কলেজে পড়াতেন। তখন আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষের ছাত্র। ওই সময় আমি এখানে (জাফলং) এসেছি। এই এলাকাটাকে ধ্বংস করা হয়েছে রীতিমতো। জায়গাটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এই যে পাথর উত্তোলন করে এবং এই যে ক্র্যাশারগুলো তো সর্বনাশ করে দিল। এখন থেকে আপাতত আর পাথর উত্তোলন হবে না। এখানে থাকা ক্র্যাশারগুলো সরাতে হবে। আমি এসে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসির কাছে জানতে চেয়েছি, পাথর উত্তোলন হচ্ছে না। তাহলে এখানে পাথরগুলো কোথা থেকে এসেছে? এগুলো এখান থেকে সরাতে সবাইকে বলা হয়েছে।’