ঢাকা বুধবার, ১৮ই জুন ২০২৫, ৫ই আষাঢ় ১৪৩২


অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ চট্টগ্রাম, ভোগান্তিতে জনজীবন


১৮ জুন ২০২৫ ১২:০১

আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ১৬:৫০

চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থীরা এবং শ্রমজীবী মানুষ

টানা বৃষ্টিতে আবারও জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা। মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে নগরীর প্রধান সড়কগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থীরা এবং শ্রমজীবী মানুষ।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টিপাত হয়েছে ৬৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার। সমুদ্র বন্দরে জারি রয়েছে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত।

জলাবদ্ধতায় বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে জিইসি মোড়, আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, বাকলিয়া, রাহাত্তারপুল ও হালিশহর। এসব এলাকায় সড়কজুড়ে হাঁটু থেকে কোমর পর্যন্ত পানি জমে থাকায় যান চলাচল একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে।

চৌমুহনী এলাকায় আটকে পড়া গার্মেন্টসকর্মী আফরোজা ইসলাম বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম কাজে যোগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু চৌমুহনী পৌঁছেই দেখি রাস্তায় হাঁটুসমান পানি। রিকশা তো নেই, বাসও আসছে না। বাধ্য হয়ে ভিজে হেঁটেই যেতে হয়েছে।’

রাহাত্তারপুল এলাকায় কর্মস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করা ব্যাংক কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, ‘প্রতিদিন অফিসে যেতে ২০ মিনিট লাগে। আজ এক ঘণ্টায়ও পৌঁছাতে পারিনি। রাস্তার ওপর পানি আর যানজটে পুরো নগরী স্থবির হয়ে আছে।’

নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় স্থানীয় দোকানি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় পানি জমে। আমাদের দোকানপাটে পানি ঢুকে পড়ে। বিক্রি-বাট্টা সব বন্ধ হয়ে যায়। অথচ এই সমস্যার স্থায়ী কোনো সমাধান নেই।’

সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে জলাবদ্ধতার বিভিন্ন ভিডিও ও ছবি। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘চট্টগ্রামে বৃষ্টি মানেই দুর্ভোগের অন্য নাম।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিকভাবে পরিষ্কার না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যা চললেও নগর কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগর পরিকল্পনার অসামঞ্জস্য ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে প্রতিবছরই এমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ও সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই।