ঢাকা শনিবার, ২১শে জুন ২০২৫, ৭ই আষাঢ় ১৪৩২


সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে জমি দখল, ভাঙচুর ও ঘর নির্মাণের অভিযোগ


২০ জুন ২০২৫ ২৩:৩৮

আপডেট:
২১ জুন ২০২৫ ০৪:২৭

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের উত্তর ক্ষেত্রপাড়া এলাকায় জমি দখল, হামলা ও ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক মালির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মোঃ হুসাইন আহমেদ কলারোয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, গত ৯ জুন ২০২৫ সকাল ৮টার দিকে হুসাইন আহমেদ তার বাবা ও ছোট ভাইকে নিয়ে কলারোয়া বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পূর্ব শত্রুতার জেরে সিদ্দিক মালি ও তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।

হামলাকারীদের মধ্যে ছিলেন মৃত ফকির আহমেদের ছেলে মোশারফ, ওজিয়ার মোড়লের ছেলে মুকুল, তমেজ মোড়লের ছেলে ওজিয়ার, ফটিক গাজীর ছেলে মালেক, মৃত সামাদ ধামাকের ছেলে বাবলু ধামাক, সাজ্জাদ মোড়লের ছেলে রবিউল ইসলাম, সিদ্দিক মালির ছেলে আবু সাঈদ ও নুরুল হুদার ছেলে শফিকুলসহ আরও অনেকে।

হামলায় হুসাইনের বাম হাত মারাত্মকভাবে জখম হয়। তার মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ছোট ভাই ও পিতাকেও মারধর করে বাড়ির মধ্যে আটকে রাখে। অভিযুক্ত সিদ্দিক মালি হুমকি দিয়ে বলেন, “বিএনপি-জামাত নেতাদের দিয়ে তোকে মেরে সরসকাটি বাজারে ঝুলিয়ে দেবো। ২০১৩ সালে অনেককে মেরেছি, কেউ কিছু করতে পারেনি। তোরা কিছুই করতে পারবি না।”

ভুক্তভোগীদের দাবি, পরবর্তীতে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সহায়তা চাওয়া হলে সরসকাটি ক্যাম্প ইনচার্জ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন এবং মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে অভিযুক্তরা এখনো হুমকি অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ।

ভুক্তভোগীর পিতা বলেন, “আমাদের গেট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দেয়। বলে, তোরা জমিও পাবি না, আবার মারও খাবি। আমরা চাই কাগজপত্র দেখে যার যা প্রাপ্য, সে সেটাই পাক।” তিনি জানান, উক্ত জমি প্রায় ৫০ বছর আগে চার ভাগে ভাগ হয়েছিল, কিন্তু সিদ্দিক মালি একাই পুরো জমি দখল করতে চান।

অভিযুক্ত সিদ্দিক মালি বলেন, “আমি ওই জমির শরিক। আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে না বলেই সমস্যা। আমি দখল করেছি বা ছিনতাই করেছি—এই অভিযোগ সত্য নয়।”

এ বিষয়ে কলারোয়া থানার এসআই আনিসুর রহমান বলেন, “আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। জমি নিয়ে কোর্টে মামলা চলমান। সেনাবাহিনীও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। এক পক্ষ দখল করতে গেলে সেনাবাহিনী তা বন্ধ করে। আমাদের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, সেটাই করেছি।”

ভুক্তভোগীরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপে স্থায়ী সমাধান চেয়েছেন।