কুড়িগ্রামে সোনাহাট সেতু ভেঙে যান চলাচল বন্ধ

পাথর বোঝাই একটি ট্রাক পারাপারের সময় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট সেতুর পাটাতন ভেঙে গেছে; এতে বন্ধ হয়ে গেছে সব ধরনের যান চলাচল।
গতকাল রোববার সকালে এ ঘটনার পর থেকে স্থলবন্দরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বলে জানান কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম।
ব্রিটিশ শাসনামলে নির্মাণ করা প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো সেতুটি অনেক আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু দিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন।
ঘটনার দিন সোনাহাট স্থলবন্দর থেকে পাথর বোঝাই একটি ট্রাক সেতুর মাঝামাঝি স্টিলের অংশে পাটাতন ভেঙে আটকে যায়। এরপর থেকে সেতুতে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ অফিসগামী লোকজন মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন। সেতুর দুই পাশে যানবাহনের লম্বা সারি দেখা গেছে। তবে জরুরি প্রয়োজন সারতে কেউ কেউ নৌকায় পারাপার হচ্ছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেতুটির বিভিন্ন স্থানে পাটাতন ভেঙে ও লোহার পাতি খুলে গেছে। এ ছাড়া সেতুর লাল অংশে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। তবুও জীবিকার তাগিদে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন।
ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৮৭ সালে লালমনিরহাট থেকে ভারতের গৌহাটি পর্যন্ত রেললাইন স্থাপন করা হয়। সেই সময় ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুধকুমার নদের ওপর ১২০০ ফুট দীর্ঘ সোনাহাট রেলসেতু নির্মাণ করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাদের প্রবেশ ঠেকাতে সেতুটির একটি অংশ ভেঙে দেওয়া হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এরশাদ সরকারের আমলে সেতুটি মেরামত করে এ উপজেলার দক্ষিণের তিন ইউনিয়ন ও কচাকাটা ও মাদারগঞ্জের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ সচল করা হয়।
এইচএসসি পরীক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস, রাজিমুল ও সোহেল রানা জানান, পরীক্ষার হলে সাড়ে ৯টার মধ্যে প্রবেশ করতে হয়। রিজার্ভ ইজিবাইক নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাচ্ছিলেন তারা। কিন্তু সেতুতে যান চলাচল করতে না পারায় হেঁটেই তাদের পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
ইজিবাইক চালক বাবুল বলেন, চর ভূরুঙ্গামারীর নতুন হাট থেকে আটজন যাত্রী নিয়ে কুড়িগ্রাম যাচ্ছিলেন তিনি। সকালে এসে দেখেন সেতুতে ট্রাক আটকা পড়েছে। কোনো যানবাহন চলছে না। তাই যাত্রী নেমে গেছে।
অতিরিক্ত পাথর বোঝাই একটি ট্রাকের কারণে সেতুর পাটাতন ভেঙে গেছে; মেরামত করে দ্রুত যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে বলে জানান কুড়িগ্রাম সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম।