ঢাকা শনিবার, ১১ই মে ২০২৪, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩১


নিউজিল্যান্ড ছাড়ার নেই ইচ্ছা হামলায় বেঁচে যাওয়া হাসানের


১৯ মার্চ ২০১৯ ২১:০০

আপডেট:
১১ মে ২০২৪ ০২:০৩

নিউজিল্যান্ড ছাড়ার নেই ইচ্ছা হামলায় বেঁচে যাওয়া হাসানের

নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার মুখে বেঁচে ফেরা সোমালি বংশোদ্ভূত আবদেল শেখ হাসান জানালেন, কখনো ভাবেননি ক্রাইস্টচার্চ হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে দেশটিতে। আর এ দেশ ছাড়বেন না তিনি।

আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার দুপুরে যখন লিনউড মসজিদে হামলার পর মৃতদেহের স্তুপের নিচে নিজেকে দেখতে পান হাসান।

তিনি জানান, যখন এক সশস্ত্র ব্যক্তি মসজিদে ঢুকে গুলি বর্ষণ করে তখন নামাজের সামনের সারিতে ইমামের কাছাকাছি ছিলেন। গুলির ফাঁদে পড়েন তারা। হাসান বলেন, “সর্বত্র শুধু রক্ত আর রক্ত।”

খুব ভয় পেলেও হাসান কোনো আঘাত পাননি। দেখতে পান চারদিকে ছড়িয়ে আছে লাশ। পাশেই পড়েছিল এক বন্ধুর মৃতদেহ। তার মাথায় গুলি করা হয়েছিল।

“সাতজন মারা যায় এবং অনেকেই আহত হন। তাদের মধ্যে নারী ও শিশু ছিল। সবাই স্তব্ধ হয়ে যায়”, বলেন হাসান।

লিনউড মসজিদের অল্প কিছু আগে বন্দুকধারীর আক্রমণে কাছের আল নূর মসজিদে মারা যান আরও ৪০ জন মুসল্লি। সব মিলিয়ে এ ঘটনায় নিহত সংখ্যা কমপক্ষে ৫০। আহত হয়েছেন কয়েকজন ডজন। এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে উল্লেখ করেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা অরডার্ন।

এ ঘটনায় ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন হ্যারিসন টার‌্যান্টকে আটক করেছে নিউজিল্যান্ড পুলিশ।

আট বছর আগে সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার মুখে ‘শান্তি’র আশায় সোমালিয়া থেকে পালিয়ে আসেন হাসান। ২৮ বছরের এ যুবকের মতে, নিজ দেশের নিরাপত্তা খুবই খারাপ, কিন্তু কখনো ভাবেননি নিউজিল্যান্ডে এমন কিছু ঘটবে।

সঙ্গে যোগ করেন, “কিন্তু আমরা মুসলিমরা বিশ্বাস করি ভালো বা মন্দ যা কিছুই ঘটুক, আল্লাহ আমাদের পরীক্ষা করছেন, তিনি দেখছেন আমরা নবী মোহাম্মদকে (সা.) অনুসরণ করছি কিনা।”

নিউজিল্যান্ডের ৫০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৫০ হাজার মুসলিম। যাদের অনেকে এসেছেন ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও ফিলিস্তিন থেকে।

তবে ক্রাইস্টচার্চের ৪ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিম মাত্র কয়েক হাজার। শুক্রবারের ঘটনায় স্থানীয় প্রতিটি মুসলমানের ঘরে শোক ছড়িয়ে পড়ে। নিহতের মধ্যে কয়েকজন বাংলাদেশের।

হাসান জানান, এখানকার মুসলিমরা সবাই সবাইকে ভালোভাবে চেনেন। তারা একসঙ্গে প্রার্থনা করে অনেক সময় কাটালেও এখন মৃতদেহ সৎকারে ব্যস্ত।

এমন দুঃখজনক ঘটনা সত্ত্বেও ক্রাইস্টচার্চ ছাড়ার পরিকল্পনা নেই হাসানের। এটাই এখন তার বাড়ি। সেখানে থাকতে চান। বিশ্বাস করেন নিউজিল্যান্ড তার জন্য নিরাপদ স্থান, সেরা দেশ।