কংগ্রেসে পদত্যাগ হিড়িক
ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। গত বৃহস্পতিবারের প্রকাশিত ফলে পার্টি হিসেবে কংগ্রেস হেরে গেলেও গতবারের তুলনায় উন্নতি হয়েছে তাদের। কিন্তু ফল প্রকাশের দিন সন্ধ্যায় নিজের ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগের প্রস্তাব দেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
রাহুল গান্ধীর পথ অনুসরণ করে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট অভিনেতা রাজ বাব্বরও গতকাল শুক্রবার রাহুলের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। আজ রাজধানী নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের কার্যকরী কমিটির (সিডব্লিউসি) বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠক থেকেই সিদ্ধান্ত হবে রাহুলের পদত্যাগ প্রসঙ্গে। তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কংগ্রেসের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ইউপিএ জোট নেতা সোনিয়া গান্ধী তার এই প্রস্তাবে সায় দেননি।
রাহুলের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠানোর পর রাজ বাব্বর এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের এই ফল অত্যন্ত হতাশাজনক। আমি সঠিকভাবে আমার দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। দলীয় নেতৃত্বকে আমি আমার বক্তব্য জানাব।’ সাবেক এই অভিনেতা ফতেহপুর সিক্রি থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু বিজেপি-ঝড়ে তিনি মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি।
কংগ্রেসের কাছে হারের ধাক্কা সবচেয়ে বেশি লেগেছে উত্তরপ্রদেশে। কারণ এই প্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে মাত্র একটি পেয়েছে দলটি। এমনকি গান্ধী পরিবারের ঐতিহ্যবাহী আসন আমেথি, যেখান থেকে খোদ কংগ্রেস সভাপতি দাঁড়িয়েছিলেন, সেই আসনটিও বিজেপির স্মৃতি ইরানির কাছে হারাতে হয়। ৩ লাখ ভোট গণনা বাকি থাকতেই ইরানির কাছে পরাজয় মেনে নিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলে, ‘আমেথিতে জয় পাওয়ায় স্মৃতি ইরানিকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ তবে রায়বেরালিতে নিজের আসন ধরে রেখেছেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী। ২০০৪ সাল থেকে তার দুর্গ বলে বিবেচিত হয়ে আসছে আসনটি। প্রায় ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে সেখানে বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার ওড়িশার কংগ্রেস সভাপতি নিরঞ্জন পট্টনায়েকেও পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের পরপরই কর্ণাটকে দলের প্রচারের দায়িত্বে থাকা এইচ কে পাটিলও পদত্যাগ করেন।
সর্বশেষ বেসরকারি ফল অনুসারে কংগ্রেস এবারের নির্বাচনে জোটের বাইরে পেয়েছে ৫২টি আসন। কংগ্রেসের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাই এবার হেরেছেন, যাদের মধ্যে আটজন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীও রয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছে দিল্লির তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিত, উত্তরাখণ্ডের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত, হরিয়ানার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হোড়া শনিপাত, মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী দিগ্বিজয় সিং, মহারাষ্ট্রের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার সিন্দে, মেঘালয়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা এবং কর্ণাটকের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ভিরাপ্পা মইলি।