ডিএমপির চারবারের শ্রেষ্ঠ এসি'র বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ!

ডিএমপি'র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার, পল্লবী জোন, এস, এম, শামীমের বিরুদ্ধে প্রভাবশালী একটি মহলের অপপ্রচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। গত ০১.০৮.১৯ ইং তারিখে শহিদুল হাসান পাঠান নামে এক ব্যক্তি পুলিশের আইজিপি মহোদয় বরাবর একটি অভিযোগ করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরূদ্ধে। যে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে কিছুদিন আগে জহির নামে এক ভদ্রলোক এসি শামীমের কাছে একটি জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধের জেরে নিজের জীবনের আশঙ্কার অভিযোগ করেন। জহির জানান, যেকোন সময় তাকে মেরে ফেলা হতে পারে তার নিজের জমির কাছে গেলে। তখন ঐ পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয় আদালত দেখবে, এ বিষয়ে পুলিশ কিছু করতে পারবে না। তবে ফৌজদারি অপরাধ সংগঠিত হতে পারে বিধায় এসি সাহেব উভয় পক্ষকে ডেকে হুশিয়ার করে দেন। যাতে কোন মারামারি বা হত্যার ঘটনা ওইখানে না ঘটে আর ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পবরর্তীতে জহির গত ১৬-০৬-২০১৯ ইং তারিখে ভাষানটেক থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন তাকে হত্যার হুমকি থেকে বাঁচার জন্য। যার নম্বর- ৪৯৮।
যুগ্ম জেলা জজ, সাউদ হাসান, ৩য় আদালত, ঢাকা কর্তৃক এই জমির বিষয়ে বিবাদীদের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে জমি হস্তান্তর বা কোন প্রকার আকৃতি পরিবর্তন করা যাবেনা এবং নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বিবাদী-দের প্রতি নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। গত ২৩.০৭.১৯ ইং তারিখে এই আদেশ জারি করেন মহামান্য কোর্ট।আজকে পর্যন্ত বিবাদি পক্ষ মহামান্য কোর্টের এই কারণ দর্শাননি মর্মে জানা যায়। প্রকৃতপক্ষে মহামান্য কোর্টের নির্দেশে জমির কাজ বন্ধ হয়েছে। তাহলে পুলিশের বিরুদ্ধে জমি দখলে সহায়তার অভিযোগ ভিত্তিহীন ও হাস্যকর বটে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শামীমের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী শহিদুল হাসান পাঠান, যিনি একটি কলেজের বাংলার শিক্ষক। যার সাথে কিলার ইব্রাহিমের আপন ভায়রা সজিব (যার নামে বিভিন্ন থানায় ২৫ টার উপরে মামলা রয়েছে) এবং কিলার ইব্রাহিমের ক্যাশিয়ারখ্যাত বিল্লালের সাথেও সুসম্পর্ক রয়েছে।
মোবাইলে কথোপকথনের একটি রেকর্ডিংয়ে শুনা যায় তিনি (শহিদুল হাসান পাঠান) বলছেন যে, আমরা ওদের দুজনকে(সজিব এবং বিল্লাল) রেখেছি আমাদের ব্যাকআপ শক্তি হিসেবে। কাজ শেষে সজিব এবং বিল্লালকে ২ টি ফ্লাট দিয়ে দিব। জমির প্রকৃত মালিক জহির কখনো জমির দাবি নিয়ে আসলে এই দু'জন তাকে ঠেকাবে।
এমনকি দেশের নামকরা একটি কলেজের শিক্ষককে সামনে এনে অভিযোগকারীরা সাধারণ মানুষের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
জানা যায়, জহির কলেজ শিক্ষক শহিদুলের নামে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর শহিদুল তড়িঘড়ি করে এসি শামীমকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে এসিকে ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়েই শহিদুল নিজের দোষ ঢাকতে আইজিপি বরাবর ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন।
পল্লবীর স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, আমাদের পল্লবীতে একসময় মাদক আর জুয়ার আখড়া ছিলো। গত ২০ বছর ধরে এখানে 'সাথী ক্লাব' নামে একটি জুয়ার বোর্ড চলে আসছিলো।
সেই জুয়ার আসরে ছিলো মাদকের ছড়াছড়ি। বর্তমান এসি সাহেব যোগদান করার এক সপ্তাহের মধ্যে সেই 'সাথী ক্লাব' নামক জুয়ার কেন্দ্রটি সিলগালা করে দেন। সেই সাথে জুয়া খেলা অবস্থায় ১৯ জনকে আটক করেন। যা পরের দিন জাতীয় দৈনিকসহ কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিত হয়।
এসি সাহেবের এমন সাহসিকতায় অনুপ্রাণিত হয়ে পরবর্তীতে এক সপ্তাহের মধ্যে তার আওতাধীন রুপনগরে আরো দুটি জুয়ার আসর ও মাদকের আখড়া ভেঙে পানিতে ফেলে দেয় স্থানীয় বাসিন্দারা।
এছাড়া এসি সাহেবের আওতাধীন ভাষানটেক থানা যা ছিলো মাদক আর জুয়ার অভয়ারণ্য তা এখন নাই বললেই চলে। নিজেই একের পর এক অপারেশন করেছেন এই জোনকে (পল্লবী, রুপনগর, ভাষানটেক) মাদক, সন্ত্রাস, জুয়া, জংগীবাদ, দখলবাজ মুক্ত করার জন্য।
রুপনগরের স্থানীয় বাসিন্দা শোয়েব জামান এই প্রতিবেদক কে জানান, রূপনগর বেড়িবাঁধে দীর্ঘদিন ধরে চলমান ছিনতাই, ডাকাতি এর আগে কেউ বন্ধ করতে পারেনি। এসি সাহেব যোগদান করার পর নিজে অপারেশনে গিয়ে ছিনতাই এবং ডাকাত দলের সদস্যদের ধরে আইনের আওতায় এনেছেন। বিশেষ করে নাট্য অভিনেত্রী রোজি সিদ্দিকি বেড়িবাঁধে ছিনতাইয়ের কবলে পড়লে, উনি নিজে মামলাটি মনিটরিং করেন এবং দিন রাত পরিশ্রম করে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসেন পুরা ডাকাত সিন্ডিকেটকে।
গত পাচ মাসে বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি ছিনতাই বা ডাকাতির খবর শুনা যায়নি বা কেউ মামলা ও দিতে আসেনি ছিনতাই বা ডাকাতির কবলে পড়ে। এখন বেড়িবাঁধ এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি নেই বললেই চলে। এজন্য এসি সাহেব বিশেষ পুরষ্কারও পেয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মহোদয়ের কাছ থেকে। এমনকি এলাকার সব শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরেছেন তিনি। তালিকাভূক্ত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনেছেন।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, কিছুদিন আগে পল্লবীর মুসলিম বাজারের এবং নিউ সোসাইটি মার্কেটের ফুটপাত হকারমুক্ত করেছেন উনি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে।
জানা যায়, এসব কাজ করতে গিয়ে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে অনেক প্রভাবশালী মহলের তদবির উপেক্ষা করতে হয়েছে। এর ফলে এসব জুয়ার আসর, মাদক ব্যবসা, ফুটপাতের লক্ষ লক্ষ চাঁদার টাকা বন্ধ হয়ে যায় প্রভাবশালী ওই মহলের। রাতারাতি ওই মহলটি এসির প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা এই এসিকে যেকোন উপায়ে পল্লবী জোন থেকে সরাতে উঠে পড়ে লাগেন আর বার বার খবর নেন উনার প্রমোশন হবে কবে। পরবর্তীতে এই মহলটিই এসি শামীমের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এই অভিযোগ করান।
এ বিষয়ে এসি জনাব এস, এম, শামীমকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, 'চারবার শ্রেষ্ঠ এসি হয়েছি, আমার কর্মের বিনিময়ে। কোন অপশক্তির তোয়াক্কা না করে সবার দোয়া নিয়ে নিয়ে কাজ করতে চাই।জমিজমা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করবে মহামান্য কোর্ট, এটা আমার এখতিয়ারের বাইরে আর এ বিষয় নিয়ে আমি কোন কথা বলিনি। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে কোন অবনতি না হয় সেজন্য দু পক্ষকে ডেকে সতর্ক করে দিয়েছি মাত্র।'
উল্লেখ্য, গত ০৫-০৩-২০১৯ তারিখে তিনি পল্লবী জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই
“পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ” এই স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতে তিনি নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।