আ.লীগের হাল ধরছেন প্রধানমন্ত্রী কন্যা পুতুল!

তরুণ নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ আসার সম্ভাবনা এবার খুব বেশি
শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার যিনি হবেন তাকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনা হবে!
সময়ের প্রয়োজনে তারুণ্যনির্ভর আ'লীগের কথা ভাবছেন শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পরে বঙ্গবন্ধু পরিবারের এক সদস্য এবার দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসতে পারেন বলে জল্পনা চলছে সর্বত্র। এমনকি আওয়ামী লীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতার মুখেও শোনা যাচ্ছে এমন কথা।আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর এক সদস্য বলেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা এবার সভাপতি পদে থাকলেও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরবর্তী শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার যিনি হবেন তাকেই কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনা হবে।
কারণ এ দফায় নেতা না হলে অনেক পিছিয়ে যেতে হবে। তাছাড়া বয়সের বিয়ষটি তুলে দলীয় সভাপতির পদ থেকে বিদায় নিতে চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য বলেন, শেখ হাসিনার স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন এমন একজনকে প্রস্তুত করে তুলতেই এবারে কমিটিতে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের ভেতর থেকে একজনকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আনা হতে পারে। সভাপতিম-লীর ওই সদস্য আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু পরিবারের ওই নেতার সঙ্গে মানিয়ে রাজনীতি করতে পারেন এমন নেতারাই এবারের কমিটিতে পদ পাবেন। তবে অবশ্যই তাদের রাজনৈতিক যোগ্যতা-দক্ষতা ও পারিবারিক ঐতিহ্য থাকতে হবে।
আওয়ামী লীগের সম্পাদকম-লীর এক সদস্য বলেন, তরুণ নেতৃত্বের আওয়ামী লীগ হওয়ার সম্ভাবনা এবার খুব বেশি। সময়ের প্রয়োজনে রাজনীতিতে তারুণ্যনির্ভর আওয়ামী লীগের কথা ভাবছেন শেখ হাসিনা। সভাপতির দায়িত্ব পালন করে তারুণ্যনির্ভর আওয়ামী লীগকে ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে সংকট মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে পারেন, তা আবার পদে থেকে তা নিশ্চিত করতে চান শেখ হাসিনা।
এদিকে, আওয়ামী লীগের আসন্ন ২১তম জাতীয় সম্মেলন ঘিরে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। এছাড়া, আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল হচ্ছে আওয়ামী লীগের আগামী দিনের কান্ডারী।
তবে সাম্প্রতিক ইদানিং দেশে বিদেশে সার্বক্ষণিক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হতে দেখা যায় সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে।
নেতারা মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে হাতে কলমে রাজনীতির অনেক বিষয় শেখাচ্ছেন।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। তিনি বেশ ভালো বক্তাও। বিশেষ করে পুতুল একজন প্রখ্যাত অটিজম বিশেষজ্ঞ। সারাবিশ্বেই তিনি অটিস্টিক শিশুদের অধিকারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষজ্ঞ প্যানেলের একজন সদস্য। তিনি একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানী।
সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের স্বামীর নাম খন্দকার মাশরুর হোসেন। তার তিন কন্যা এবং এক ছেলে। স্বামী খন্দকার মাশরুর হোসেন আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে ফরিদপুর জেলা থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
সায়মা ওয়াজেদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে মনোবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি, ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজির ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন।
পুতুল ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি লাভ করেন। ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের সময় তিনি বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। এ বিষয়ে তার গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার একাডেমি অব সায়েন্স কর্তৃক শ্রেষ্ঠ সায়েন্টিফিক উপস্থাপনা হিসেবে স্বীকৃত হয়।
সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল ২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়ুবিক জটিলতাসংক্রান্ত বিষয়ের ওপর কাজ শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই তার কাজ বিশ্বজুড়ে প্রশংসা পেয়েছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পুতুলকে হু অ্যাক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। মনস্তত্ববিদ সায়মা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান অটিজম স্পিকস-এর পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেন। তিনি ২০১৩ সালের জুন থেকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষজ্ঞ পরামর্শক প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত হন।
প্রসঙ্গত, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের উদ্যোগে ২০১১ সালে ঢাকায় প্রথমবারের মতো অটিজম বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
নেতৃত্ব দেয়ার মতো সকল গুন তার রয়েছে বলে মনে করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। অনেকেই বলছেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল যদি আওয়ামী লীগে সক্রিয় হয়ে মানুষের পাশে থাকেন তাহলে তিনিও হতে পারেন দলটির কাণ্ডারি। সেটা সময়ই বলে দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিশ্চয়ই পুতুলের মতো মেধাবীকে মানুষের সেবা করার জন্য রাজনীতিতে টানবেন।