ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


সেই এশাকে বিয়ে করছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সোহাগ


২ জানুয়ারী ২০২০ ০৪:১৯

আপডেট:
১০ মে ২০২৫ ০১:৩০

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে আলোচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ইশরাত জাহান এশাকে বিয়ে করছেন সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।

এশা ও সোহাগের পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী তাদের বিয়ের তারিখ ঠিক করে দেন। পরে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে সোহাগ এ তথ্য জানান।

ছবির ক্যাপশনে সাইফুর রহমান সোহাগ লিখেন, আমার অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের বিয়ের তারিখ ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ঠিক করে দিয়েছেন। সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা। Happy New Year.



কোটা সংস্কারের দাবিতে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের টানা আন্দোলনের মধ্যে ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলে এক ছাত্রীর রগ কেটে দেওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হলের মোর্শেদা নামের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর রক্তাক্ত পায়ের ছবিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবির সঙ্গে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে হলের মেয়েদের রগ কেটে দিয়েছেন এশা। এই গুজবের ওপর ভিত্তি করে হলের মেয়েরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। এরপর ছাত্রীরা এশাকে মারধর করেন এবং জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করেন।

তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী ওই হলে গিয়ে এশাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেন। ওই রাতেই ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এশাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠান। এ ছাড়া ঘটনা তদন্তে কমিটিও গঠন করে ছাত্রলীগ। পরে জানা যায়, মোর্শেদার পা কেউ কাটেনি, বরং এশার কক্ষের জানালার কাচে লাথি মারতে গিয়ে তাঁর পা কেটে যায়।

এরপর ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা এশার সঙ্গে দেখা করেন এবং তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও গণমাধ্যমে কথা বলেছেন।

পরবর্তী সময়ে এশার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ। ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান ওই সময় সংবাদ সম্মেলনে করে বলেন, সেই রাতে পরিস্থিতিটাই তখন এমন ছিল যে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য এশাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।

তদন্ত কমিটির আরেক সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘ওই ঘটনার সব ভিডিও এবং প্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই হলে ছাত্রলীগের একটি অংশ এশার ওপর নির্মমভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। অভিযোগে (রগ কাটা বা পা কাটা) সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।’