প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ,দু:খ প্রকাশ প্রতিবেদকের!

"পাহাড়সম দুর্নীতি অভিযোগ, তবুও বহাল তবিয়তে প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন" শিরোনামে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ দৈনিক আমাদের দিন এর অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি)।তাঁদের প্রতিবাদলিপিতে দাবি করা হয়-তথাকথিত তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তৈরি প্রতিবেদনটির তথ্য-উপাত্ত সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
এদিকে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ আছে যে, ইজিপির আওতায় টেন্ডারে সুক্ষ্মভাবে দুর্নীতির মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ দেয়ার ঘটনা অহরহই ঘটছে। ধূর্ত ও চতুর কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন অপকৌশল প্রয়োগ করে কার্যাদেশ দিয়ে থাকেন।
এইভাবে আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন যাবত প্রধান কার্যালয়ের টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। যার ফলস্বরূপ তার পছন্দের কয়েকজন ঠিকাদারকে ঘুরেফিরে কাজ পাইয়ে দেন। বিনিময়ে পকেটস্থ করেন ১৫শতাংশ হারে কমিশন। তথ্যটির প্রতিবাদ জানিয়ে প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, তথ্যটির কোন ভিত্তি নেই, আমাকে হেয় করার অসৎ উদ্দেশ্যে একটি মহল সংবাদাতাকে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন তথ্য দিয়েছে। এইচইডি’র প্রধান কার্যালয়ে শতভাগ টেন্ডার স্বচ্ছতার সংগে e-GP তে হয়ে থাকে। তিনি PE বা HOPE কোনটিই নন। তিনি কেবল মাত্র ১২ কোটি টাকার নিম্ন মূল্যের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি।তাছাড়া e-GP তে সবকিছুই স্বচ্ছতার সংগে হয় বিধায় মূল্যায়ন কমিটি বা অন্য কারো পক্ষেই কিছু করার সুযোগ নেই। তাই ই-জিপির আওতায় টেন্ডারে দুর্নীতি করার কোন সুযোগ নেই। সেখানে ১৫শতাংশ হারে কমিশন কথাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক, মিথ্যা , বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
এছাড়াও, আরো প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, মেসার্স নূরানী কনস্ট্রাকশন লি: কে কাজ পাইয়ে দেন, সর্বশেষ তিনি টাঙ্গাইল জেলায় ৩৬ কোটি টাকা ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি নির্মাণ কাজটি তার শ্বশুরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নূরাণী কনস্ট্রাকশন লি: কে দিয়েছেন। এ বিষয়ে জনাব মো: আনোয়ার হোসেন বলেন বর্ণিত কাজের প্রকিউরিং এনটিটি (PE), টেন্ডার ওপেনিং কমিটি (TOC ) বা দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (TEC) এর কোনটিই ছিলেন না তিনি অর্থাৎ কাজটির দরপত্র প্রক্রিয়ার কোন পর্যায়েই তিনি জড়িত ছিলেন না। তাছাড়া e-GP তে দরপত্রের ক্ষেত্রে কারো কোন দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। উল্লেখ্য, নূরানী কমস্ট্রাকশন লি: একটি স্বনামধন্য ও বড় প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সরকারী ডিপার্টমেন্টে অনেক বড় বড় কাজ করে থাকে। তাই এধরণের প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মনগড়া, মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
প্রতিবেদনটিতে আরো উল্লেখ আছে, মহাখালীর স্বাস্থ্য ভবন নির্মাণ কাজে প্রথম পর্যায়ে ব্যাপক দুর্নীতি হয়। ঠিকাদারকে ভুয়া বিল দিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা ভাগাভাগি করা হয়। প্রথম পর্যায়ে চার তলা ভবন নির্মাণে প্রায় ৩৪ কোটি টাকা কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু ভবনটির কলাম, বিম ও ছাদ ঢালাই করে ভুয়া পরিমাপ দিয়ে সমুদয় টাকা ব্যয় করা হয়।মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্তে কোটি কোটি টাকা ভুয়া বিল প্রদানের বিষয়টি ধরা পড়ে। ভবনটির নির্মাণকাজ চলাকালীন সময় সিটি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন, এইচইডি প্রধান কার্যালয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন। তার তত্ত্বাবাধানে এই কাজটি সম্পন্ন হয় এবং তিনি বিলে স্বাক্ষর করেন।
প্রতিবাদলিপিতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়- তথাকথিত তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তৈরি প্রতিবেদনটির তথ্য-উপাত্ত মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এধরণের কোন তদন্ত প্রতিবেদনের অস্তিত্ব নেই।
প্রকৃতপক্ষে প্রথম পর্বে মহাখালীতে ২০ তলা ভিত্তির ওপর তিনটি বেজমেন্টসহ চারতলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ কাজের জন্য ৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ব্যবহারকারী কর্তৃপক্ষের চাহিদা মোতাবেক অনুমোদিত চূড়ান্ত নকশায় তিনটি বেজমেন্টের আয়তন ২০.৫৭ শতাংশ এবং সুপারস্ট্রাকচারের চারটি ফ্লোরের আয়তন ১১.৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
বেইজমেন্ট ও সুপার স্ট্রাকচারের মোট আয়তন বৃদ্ধি পায় ১৫.৫৭ শতাংশ। পাইলিং এর বোরিং, পাইলিং এর আরসিসি’র পরিমান বৃদ্ধিসহ RCC Work, MS Rod সহ বিভিন্ন আইটেমে কাজের পরিমান বৃদ্ধি পায়। এছাড়া আরও কিছু আইটেমের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং বাস্তব প্রয়োজনে কিছু Non Tender আইটেমের কাজ সম্পন্ন করতে হয়।ফলে চুক্তিমূল্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে ২০ তলা ভিত্তির ওপর তিনটি বেজমেন্টসহ চতুর্থ তলা পর্যন্ত অবকাঠামো (Structure) নির্মাণ এবং ১ম ও ২য় তলার ফিনিশিং কাজ অন্তর্ভূক্ত করে সুস্পষ্ট প্রতিবেদনসহ একটি Statements of Variation & Extra Work প্রস্তুত করা হয়।
প্রস্ততকৃত Statement of Variation and Extra Work অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলে তা পরীক্ষা- নিরীক্ষা পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্মাণ অধিশাখার স্বারক নং ১৩৯ তারিখ : ২১/০৪/২০১৪ খ্রি: দ্বারা অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন ও চিকিৎসা শিক্ষা) মহোদয়কে আহ্বায়ক করে ৪ (চার) সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয়ের স্বারক নং - ৪০৮ তারিখ : ২২/০৯/ ২০১৪ খ্রি: দ্বারা =৫৭,৭৮,৮৮৬.৪৮ টাকা কর্তন পূর্বক =৩৩,৩৪,০৩৮২৫.৩৬ টাকার Statement of Variation and Extra Work অনুমোদন করা হয়।স্বাস্হ্য ভবন নির্মাণের ১ম পর্বের যাবতীয় কাজ চুক্তিমূল্যের মধ্যেই মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত Revised Variation & Extra Works মোতাবেক যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে। বর্ণিত কাজটি সমাপ্তপূর্বক ব্যবহারকারী কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করা হয় এবং ভবনটি যথাযথভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
এ কাজে কোনো প্রকার অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। সুতরাং কাজের মোট আইটেম ও সম্পাদিত কাজের আইটেমের মধ্যে ঐকিক নিয়মে শতকরা হার বের করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দূরভিসন্ধিমূলক। একইভাবে ৩৭ ধরনের কাজের পরিমাপে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকার গরমিলও কাল্পনিক, মনগড়া, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
প্রতিবেদকের বক্তব্য,এদিকে, প্রকাশিত সংবাদের তথ্যগত ভুল থাকায় আন্তরিকভাবে দু:খ প্রকাশ করছে এই প্রতিবেদক।একই সাথে ভবিষ্যতে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে আরো দায়িত্বশীল ভুূমিকা পালন করবে বলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।