ঢাকার বাতাসে ফের বেড়েছে দূষণ

ঢাকার বাতাসে ফের বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক পরিবেশ পর্যবেক্ষক সংস্থা IQAir–এর তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (৩১ মে) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকার বায়ুমান সূচক (AQI) ছিল ৬৫, যা “সহনীয়” পর্যায়ে থাকলেও আগের দিনের তুলনায় তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) একই সময়ে ঢাকার AQI ছিল মাত্র ২৮, যা “স্বাস্থ্যকর” পর্যায়ে ছিল এবং শহরটি তখন বিশ্বে ৯৮তম অবস্থানে ছিল। আজ সেই স্থান নেমে এসেছে ৩৪ নম্বরে।
বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় আজ শীর্ষে রয়েছে ভারতের দিল্লি, যার AQI ২২৪—”খুব অস্বাস্থ্যকর” হিসেবে চিহ্নিত। দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে চীনের বেইজিং (১৬০), ইন্দোনেশিয়ার মেদান (১৫৫) এবং পাকিস্তানের লাহোর (১৫৫)। পঞ্চম স্থানে রয়েছে আজারবাইজানের বাকু (১৩৫)।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ঢাকার বায়ুদূষণের মূল কারণ হচ্ছে বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (PM2.5) মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি। এই ক্ষুদ্র কণাগুলো মানুষের শ্বাসতন্ত্রে প্রবেশ করে হৃদ্রোগ, ফুসফুসের রোগ, এবং ক্যানসারের মতো দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি তৈরি করে।
ঢাকায় দূষণের উৎসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
রাস্তার ধুলা
যানবাহনের ধোঁয়া
নির্মাণ কাজের বর্জ্য
ইটভাটা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ধোঁয়া
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর ৬৭ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। শুধু জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণেই প্রতিবছর ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যু হয় বলে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (BMJ) ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে আসে।
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সতর্কতা হিসেবে নাগরিকদের—
অপ্রয়োজনে বাইরে বের না হওয়া, বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের জন্য বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করা এবং বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে।
ঢাকার বায়ুদূষণ দীর্ঘদিন ধরেই একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও মাঝে মাঝে বাতাসের মান উন্নত হয়, তবে তা বেশিরভাগ সময়েই অস্থায়ী। স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের নীতিগত পদক্ষেপ, নির্মাণ ও পরিবহন খাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা দিন দিন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।