ঢাকা শুক্রবার, ৬ই জুন ২০২৫, ২৪শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বার্ষিক কারিগরি কর্মশালা - ২০২৫ শুরু


২ জুন ২০২৫ ১২:৩৪

আপডেট:
২ জুন ২০২৫ ১২:৪৭

২ দিনব্যাপী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বার্ষিক কারিগরি কর্মশালা -২০২৫ রবিবার ০১ জুন, ফার্মগেট ঢাকায় শুরু হয়েছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান, সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দীপংকর বিশ্বাস, যুগ্মসচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. নাজমুন নাহার করিম। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. বেগম সামিয়া সুলতানা।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, অনেক জায়গায় ডিলাররা ভেজাল সার সরবরাহ করছে। এতে জমির স্বাস্থ্য নষ্ট হচ্ছে, উৎপাদন কমে যাচ্ছে।

কৃষি সচিব বলেন, মানুষের শরীরের মতোই মাটিরও স্বাস্থ্য থাকতে হবে। তা না হলে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটবে। কৃষির বাজেটের ৭০ শতাংশই সারে ভর্তুকি। সেখানে সার প্রয়োগ কমাতে পারলে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ বাঁচবে।
তিনি আরও বলেন, চাষিরা অনেক সময় লিজ নেওয়া জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেন মূলধন ফেরত পেতে গিয়ে। এতে জমির স্থায়ী ক্ষতি হচ্ছে। এই প্রবণতা রোধে সচেতনতা বাড়াতে হবে।

কর্মশালায় খুলনা বিভাগীয় উপস্থাপনায় বলা হয়, চলতি অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৮৭টি মাটির নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে, কৃষকরা প্রয়োজনের চেয়ে ৩-৪ গুণ বেশি সার ব্যবহার করছেন। আধা কেজি জিংক প্রয়োগ যথেষ্ট হলেও ব্যবহার করা হচ্ছে ৮ কেজি। এমনকি গুড়াচুনকে সালফার হিসেবে বিক্রি করে প্রতারণাও করা হচ্ছে, ফলে গাছের পাতা পুড়ে যাচ্ছে।
সিলেট বিভাগের উপস্থাপনায় বলা হয়, অঞ্চলটির ৯৫ শতাংশ জমি এখন অম্লীয় (অ্যাসিডিক) মাটিতে পরিণত হয়েছে। এখানে ফসফরাসের ব্যবহার বাড়ছে। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জিংক সারের ২৬০টি নমুনা পরীক্ষায় ৫৩ শতাংশে ভেজাল পাওয়া গেছে।

বরিশাল বিভাগীয় উপস্থাপনায় বলা হয়, ৮৩.৬৩ শতাংশ সার ভালো হলেও বাকি ১৬.৩৭ শতাংশ সার ভেজাল।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপস্থাপনায় বলা হয়, ইউরিয়ার অতিরিক্ত ব্যবহার জমিতে ফসফরাসের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

রংপুর বিভাগীয় উপস্থাপনায় বলা হয়, রংপুর অঞ্চলের ২ লাখ ৭৮০ হাজার হেক্টর জমির মাটিও অম্লতা সমস্যায় ভুগছে।

উক্ত কর্মশালায় মো: মামুনুর রহমান, ড. নুরুল হুদা আল মামুন, ড. মো: ফারুক হোসেনসহ মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও কর্মশালায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকগণ, প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সাবেক মহাপরিচালকবৃন্দ, সাবেক মৃত্তিকা বিজ্ঞানীবৃন্দ, বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালকবৃন্দ, মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দ, সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাগণ, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাবৃন্দসহ মৃত্তিকা বিজ্ঞানীরা উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় বিজ্ঞানীরা মৃত্তিকার বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত, গবেষণা, কৃষি সেবা, গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।