ঢাকা বুধবার, ৭ই মে ২০২৫, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩২


বন্যায় শেরপুরের ৩৫ হাজার মানুষ গৃহহীন


৬ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৩৭

আপডেট:
৭ মে ২০২৫ ১২:২৭

শেরপুরের ৩৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলায়ও। এর বাইরে উজান থেকে আসা পানিতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া এবং নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

গতকাল নালিতাবাড়ী উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, কোথাও পাহাড়ি ঢলের পানি বাড়ছে, আবার কোথাও পানি কমতে শুরু করেছে। বেশ কিছু জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় পৌর শহর থেকে কয়েকটি ইউনিয়নে প্রবেশের সড়কও বন্ধ রয়েছে।

নয়াবিল ইউনিয়নের হা‌তিপাগার গ্রামের ভোগাই নদপারের বাসিন্দা হা‌ফিজ উদ্দিন (৭০) বলেন, ‘গাঙ্গে এত পানি আগে কখনো দেখি নাই। সময় যতই যাইতাছে, গাঙ্গের পানি ততই বাড়তাছে। আটাশির বন্যার চেয়েও ভয়াবহ এবার।’

নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, পাহাড়ি ঢলে ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীর বাঁধ ভেঙে ও বাঁধ উপচে আটটি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৩৫ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। প্রায় সাত হাজার মানুষের ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার তরফ থেকে পাঁচটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় পাঁচ হাজার পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবারের প্যাকেট ও খাওয়ার পানি দেওয়া হয়েছে।

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে ভারী বৃষ্টি হয়নি। এতে মহারশি নদের পানি সামান্য হ্রাস পেয়েছে। তবে এই সময়ে উজানের ঢলে উপজেলার হাতীবান্ধা ও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় দুই হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। সব মিলিয়ে বৃষ্টি এবং মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানিতে উপজেলার ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলায় পানিবন্দী প্রায় ৭ হাজার মানুষ। গতকাল দুপুরে চেল্লাখালী নদীর পানির প্রবল তোড়ে ঝিনাইগাতী-তিনআনী-নালিতাবাড়ী সড়কের রানীগাঁও অংশের কিছুটা ভেঙে গেছে। এতে এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পশ্চিম বেলতৈল গ্রামের তারা মিয়া ও আবুল হোসেন এবং ঘাগড়া কবিরাজপাড়া গ্রামের কছিমউদ্দিন বলেন, তাঁদের বাড়িঘরে পানি ওঠায় দিনভর চুলা জ্বলেনি। তাঁরা শুকনা খাবার খেয়ে আছেন। ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের মাটিয়াপাড়া গ্রামের জাহিদ হাসান বলেন, দুই দিন ধরে তাঁরা পানিবন্দী। কোনো সাহায্য পাননি।

ঝিনাইগাতীর ইউএনও মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, উজানে পানি সামান্য কমলেও ভাটি এলাকায় পানি বাড়ছে। আজ (শনিবার) পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত এক হাজার পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।