ঢাকা শনিবার, ৩রা মে ২০২৫, ২১শে বৈশাখ ১৪৩২


মুরগির দাম কমলেও চড়া সবজি


১২ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:০২

আপডেট:
৩ মে ২০২৫ ২১:৩৮

চট্টগ্রামে কমতে শুরু করেছে মুরগির দাম। ছবিটি নগরের হালিশহর কাঁচাবাজার থেকে তোলা। ছবি: সংগৃহীত
ঈদ উপলক্ষে বেড়ে যাওয়া মুরগির বাজারদর বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১৫ টাকা ও সোনালি মুরগির কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। তবে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে মাছের বাজার।

চাহিদাকে পুঁজি করে শবে কদরের আগের দিন বেড়ে যায় মুরগির বাজার। ঈদের পরেও গত ৪ এপ্রিল সরবরাহ কমে যাওয়ার অজুহাতে চড়া দামে বিক্রি হয় মুরগি। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগিতে ১৫ টাকা কমে ১৮৫ টাকা ও সোনালি মুরগিতে ১০ টাকা কমে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৬০ টাকায়। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম মহানগরের হালিশহর, চকবাজার ও চৌমুহনী কর্ণফুলী কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

হালিশহর কাঁচাবাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মুরগির দাম বেড়েছিল। এখন সরবরাহ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। আমরাও কম দামে কিনে আনতে পারছি। তাই বাজারে মুরগির দাম এখন নিম্নমুখী।

বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দরে। প্রতি কেজি হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, হাড় ছাড়া গরুর মাংস ৯৫০ টাকা, গরুর কলিজা ৫০০ টাকা ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে সবজির বাজার বেশ চড়া দেখা গেছে। খুচরা পর্যায়ে অধিকাংশ সবজি ৬০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু সবজির দাম শত টাকা ছুঁয়েছে। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাকরোল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা, করলা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রিয়াজুদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক শিবলী বলেন, ‘গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ এখনো পুরোদমে শুরু হয়নি। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দুই সপ্তাহ পর সবজির দাম আরও কমতে পারে।’ নগরের চৌমুহনী কর্ণফুলী কাঁচাবাজারে কথা হয় আগ্রাবাদ এলাকার বাসিন্দা মো. জুয়েল মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গত মাসে সবজিসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের বাজার এতটাই নিম্নমুখী ছিল, আমরা সাধারণ মানুষ স্বস্তিতে ছিলাম। ঈদ শেষে সবকিছুর দাম বাড়তে শুরু করেছে। ঈদের আগে মুরগির কেজি ছিল ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা। এখন ১৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগির বাজার এখনো চড়া। ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে উদ্যোগ নিতে হবে।’

এদিকে মাছের বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি কাতলা মাছ ৩০০ টাকা, রুই মাছ ৩৬০ টাকা, বেলে মাছ ৫০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০ টাকা, কাঁচকি ৬০০ টাকা, কই ২৮০ টাকা, পাবদা ৪৫০ টাকা, টেংরা মাছ ৭০০ টাকা, শোল মাছ ৬০০ টাকা, বড় আকারের রূপচাঁদা ৯০০ টাকা, মাঝারি আকারের ইলিশ মাছ ১ হাজার টাকা ও বড় আকারের ইলিশ মাছ ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া মুদির দোকানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ আকারভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ছোলা ১২০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১১০ টাকা, মসুর ডাল (চিকন) ১৩৫ টাকা, মুগডাল (মোটা) ১৪০ টাকা, বুটের ডাল ১২০ টাকা, খোলা চিনি ১২০ টাকা, প্যাকেট চিনি ১২৫ টাকা, প্যাকেট ময়দা (দুই কেজি) ১৫০ টাকা, প্যাকেট আটা (দুই কেজি) ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৬৫ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, দুই লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ৩৫০ টাকা ও পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল ৮৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়ানোর সুযোগ খুঁজছে। কাজেই এখন থেকেই বাজার তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতারা।