খেদাইমারী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ, শিক্ষার্থী না থাকলেও চলছে সরকারি বই উত্তোলন

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার খেদাইমারী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে অচল ও বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয় থাকলেও প্রতি বছর এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারি বই উত্তোলন করা হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যালয়ে নেই কোনো শিক্ষার্থী, নেই ক্লাস কার্যক্রম। ভবনের ভেতরে জমে আছে শুধু খড় । বিদ্যালয়ের বারান্দায় রাখা ভুট্টার বস্তা আর দরজায় ঝুলছে বড় তালা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষার্থী বা শিক্ষক নেই। অথচ নিয়মিতভাবেই ভূয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা দেখিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে নতুন বই উত্তোলন করা হচ্ছে। বইগুলো কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হদিস মিলছে না রয়েছে নানা গুঞ্জন।
রৌমারী খেদাইমারী বিদ্যালয়ের মেঝেতে খড়েরর স্তুপ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়টি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৪ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে যায়। পরে ২০১৫ সালে এলাকাবাসীর সহায়তায় এটি নতুনভাবে স্থাপন করা হয় খেদাইমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে। তার পর থেকেই শুরু হয় নেতৃত্বের বিভিন্ন দ্বন্দ্ব।
বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো: শফিকুর রহমান অভিযোগ করেন, ২০০৬ সাল থেকে তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে আসছেন তবে, মো. আব্দুল ওহাব মন্ডল নামের এক ব্যক্তি নিজেকে প্রধান শিক্ষক দাবি করে ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জালিয়াতি করে নতুন জনবল কাঠামো দাখিল করেছেন। তার পর শিক্ষক ও দপ্তরিদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিদ্যালয়ে অনুপ্রবেশে বাধা দিচ্ছেন নিয়মিত।
দাবিকৃত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল ওহাব মন্ডল বলেন, তিনি স্কুল পরিচালনা করে আসছেন এবং ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ১৩০ সেট বই উত্তোলন করেছেন। তবে দীর্ঘদিন ধরে বেতন না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা অনীহা প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে রৌমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাকেরিনা বেগম বলেন, "আমি নতুন যোগ দিয়েছি। শিক্ষার্থী না থাকা সত্ত্বেও বই কেন উত্তোলন করা হয়েছে, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখতে সরেজমিন তদন্ত করা হবে। সাংবাদিকদের সহযোগিতাও কামনা করছি।"
স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত দ্বন্দ্ব নিরসন করে বিদ্যালয়টি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে।
যাতে এলার গরিব ছাত্র ছাত্রীদের লেখা পড়া আবার শুরু করতে পারে।