নকলায় ৬ দিনের মাথায় আরো ২ শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করলো প্রশাসন

শেরপুরের নকলায় নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ বন্ধের ৬ দিনের মাথায় এবার একই গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণির ও অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করলো উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার ২নং নকলা ইউনিয়নের ধনাকুশা গ্রামের অপ্রাপ্ত বয়স্ক দুই শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে ৩ অক্টোবর উপজেলার টালকী ইউনিয়নের টালকী পশ্চিমপাড়া এলাকার নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাল্যবিবাহ বন্ধ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।
জানা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণির ও অষ্টম শ্রেণির অপ্রাপ্ত বয়স্ক দুই শিক্ষার্থীর বিবাহের প্রস্তুতি চলছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হন। পরে এলাকাবাসীর অনুরোধে মানবিক বিবেচনায় অভিভাবকের নিকট মুচলেকা রেখে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এসময় নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন জাহানসহ পুলিশ সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম অভিভাবকদের হুশিয়ারি দিয়ে জানান, ছেলে-মেয়ের বিয়ে ঠিক করার আগে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র বা শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র দেখে বয়স সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরি। পরবর্তীতে এলাকায় কেউ যেন তাদের ছেলে-মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগে বিবাহ দিতে না পারেন এর জন্য সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হয়। উপজেলার কোন এলাকায় বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটলে বা বাল্যবিবাহের আয়োজন করলে তা বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পরিবারের অভিভাবক, বর, আয়োজক ও নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজী)-দেরকে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও তিনি সুস্পষ্ট জানিয়েদেন।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে বা বন্ধে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির সংশ্লিষ্টরা সদা তৎপর রয়েছেন বলে জানান ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম। এছাড়া বাল্যবিবাহের বিষয়ে প্রশাসনকে তথ্যদিয়ে সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে ইউএনও বলেন, ‘বাল্যবিবাহের বিষয়ে তথ্য দাতার নাম পরিচয় কঠোরভাবে গোপন রাখা হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে নকলাকে জেলার প্রথম বাল্যবিবাহ মুক্ত উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।